সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
‘অর্থ নয়, চিকিৎসা ও মেয়ের শিকলমুক্ত জীবন চাই’- এমন আকুতি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের দক্ষিণ উস্তিঙ্গেরগাঁও গ্রামের মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের মানসিক প্রতিবন্ধী আম্বিয়া খাতুনের মা রহিমা খাতুনের।
প্রতিবন্ধী আম্বিয়ার পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ আট বছর ধরে মানসিক রোগে আক্রান্ত আম্বিয়া (২২)। বিত্ত-সম্পদ না থাকায় স্বল্প পারিশ্রমিকে দিনমজুরের কাজ করে ২ ছেলে, ৩ মেয়ে ও তাদের মাসহ ৬ সদস্যের নিয়মিত অন্নই জুটছে না, প্রতিবন্ধী মেয়েটির চিকিৎসাসেবা দেওয়া তো দূরের কথা।
এদিকে পাড়া-প্রতিবেশীদের অহেতুক মারধর, আসবাবপত্র ভাংচুরসহ মানসিক প্রতিবন্ধী আম্বিয়ার কবল থেকে রেহাই পেতে, এমনকি প্রতিবন্ধী মেয়েটি হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় হাতে শিকল পরিয়ে গৃহবন্দি করে রেখেছেন তার মা রহিমা খাতুন। তাই উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে শিকলমুক্ত করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিতে সমাজের বিত্তবান তথা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তিনি।
আম্বিয়ার ছোটভাই মোজাহিদ হোসেন বলেন, আমার বোন হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে তাকে শিকলবন্দি করে রেখেছি। অর্থাভাবে মানসিক প্রতিবন্ধী বোনটিকে চিকিৎসা করা তো দূরের কথা, অনাহারে অর্ধাহারে চলছে আমাদের ৬ সদস্যদের পরিবারটি। আমি টাকাকড়ি চাই না, চাই হৃদয়বান ব্যক্তির একান্ত সহযোগিতা। আমার প্রতিবন্ধী বোনকে চিকিৎসার হাত বাড়ালে আমরা চিরকৃতজ্ঞ থাকব।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসাইন বলেন, পিতৃহীন মানসিক প্রতিবন্ধী ওই মেয়েটি আমার পাশের গ্রামের বাসিন্দা। তার মা রহিমা খাতুন বিভিন্ন বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। জোড়াতালি দিয়ে কোনোমতে চলছে তাদের সংসার। তার ওপর বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিবন্ধী ওই মেয়েটি। তার ব্যয়বহুল চিকিৎসা সেবায় সমাজের কেউ এগিয়ে আসেনি। তবে সরকারি অনুদান ছাড়াও আমার সাধ্য অনুযায়ী হতদরিদ্র ওই পরিবারটিকে আমি প্রায়ই দেখভাল করছি। ভবিষ্যতেও করব ইনশাআল্লাহ। রোগমুক্ত স্বাভাবিক জীবন গড়তে মানসিক প্রতিবন্ধী আম্বিয়া খাতুনের সুচিকিৎসায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান তিনি।