স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট মহানগরীর উত্তর বালুচরের সোনার বাংলা আবাসিক এলাকায় আফিয়া বেগম সামিহা (৩১) নামের গৃহবধূ খুনের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৯।
র্যাব বলছে- আফিয়াকে খুন করেছেন আরেক নারী। তাঁর নাম মোছা. মাজেদা খাতুন মুন্নি (২৯)। পাওনা টাকার দ্বন্দ্বে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত মুন্নিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বিকাল ৩টার দিকে বিষয়টি প্রেস ব্রিফিং করে গণমাধ্যমকে জানিয়েছে র্যাব-৯।
প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় র্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার এএসপি আহসান-আল-আলিম জানান, গত ২৩ আগস্ট (মঙ্গলবার) রাত ১১টার দিকে উত্তর বালুচর এলাকার ফোকাস-৩৬৪ নম্বর পাঁচতলা বাসা সিকান্দর মহলের নিচতলার একটি ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে আফিয়া বেগম সামিহা নামেও ওই গৃহবধূর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সিলেটের শাহপরাণ থানায় গত ২৪ আগস্ট ভিকটিমের মা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলা সূত্র ধরে রহস্য উদঘাটনে র্যাব-৯-ও গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে । তদন্তের এক পর্যায়ে মোছা. মাজেদা খাতুন মুন্নি নামেও ওই নারীকে আফিয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায় ।
পরে গােয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৯ আভিযান চালিয়ে মুন্নিকে বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) ভোরে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। মুন্নি হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানার সারংপুর গ্রামের আব্দুল গনির মেয়ে।
জিজ্ঞাসাবাদে মুন্নি র্যাবকে জানায়- আফিয়ার সঙ্গে তার টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিলো। আফিয়ার বাসায় মাজেদা সাবলেট থাকতাে। কিন্তু বেশিরভাগ দিন মাজেদা বাসায় অবস্থান করতাে না। আফিয়ার নিকট মাজেদা বিভিন্ন সময় টাকা-পয়সা গচ্ছিত রাখতাে। একপর্যায়ে মাজেদার পাওনা টাকা আফিয়া দিতে অস্বীকার করে। ফলে আফিয়ার উপর ক্ষিপ্ত হয় মাজেদা এবং আফিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
ঘটনার দুইদিন আগে (১৮ আগস্ট) আফিয়ার বাসায় আসে মাজেদা। ঘটনার দিন (২০ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে আফিয়া ও মাজেদার মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে ঝগড়া হয়। পরে ২১ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টার দিকে অকস্মাৎ মাজেদা রান্নাঘর থেকে শীল (পটার শীল) নিয়ে এসে আফিয়ার মাথার বাম পাশে সজোরে পরপর ২টি আঘাত করে।
আঘাতের ফলে তৎক্ষণাৎ আফিয়া বিছানায় লুটিয়ে পড়ে। পরে ভাের আনুমানিক ৬টার দিকে মাজেদা ওই বাসা থেকে বের হয়ে একটি রিকশা ভাড়া করে নিয়ে আসে এবং বাসার দরজা বাহির থেকে তালা মেরে সে তার মালামাল ও আফিয়ার মােবাইল ফোন নিয়ে বানিয়াচংয়ে নিজ বাড়িতে চলে যায়। কিন্তু এ ঘটনায় আশ্চর্যজনকভাবে বাসায় আটকা পড়া আফিয়ার শিশুকন্যা বেঁচে যায়। পরে তাকে পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
গ্রেফতারকৃ মাজেদাকে শাহপরাণ থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব-৯।