স্টাফ রিপোর্টার:
হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বাবা আমির হামজার নাম রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’-এর জন্য প্রস্তাব করায় উপসচিব ছেলে মো. আসাদুজ্জামানকে লঘুদণ্ড হিসেবে ‘তিরস্কার’ করেছে সরকার।
বিভাগীয় মামলায় আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে এ শাস্তি দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে গত ১৫ মার্চ স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য ১০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করে সরকার। তাতে ‘সাহিত্যে অবদান রাখায়’ মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য আমির হামজাকে মনোনীত করা হয়। এরপরই বিতর্ক শুরু হয়। সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
প্রথমে বাংলা সাহিত্যে আমির হামজার অবদান নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। তারপর বেরিয়ে আসে হত্যা মামলায় তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়ার খবর।তার এই পুরস্কার পাওয়ার পেছনে তার মেজো ছেলে উপসচিব পদমর্যাদার সরকারি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান প্রস্তাব করেন বলে খবর বের হয়।পরে তীব্র সমালোচনার মুখে ১৮ মার্চ আমির হামজার নাম পুরস্কারের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে সংশোধনী প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
এ ঘটনায় আমির হামজার নাম প্রস্তাবকারী ছেলে আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে তদন্ত চালায় সরকার। সেই তদন্তে প্রমাণ পেয়ে তাকে শাস্তি দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আজ প্রজ্ঞাপন জারি করে। তাতে বলা হয়, খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) মো. আসাদুজ্জামান সরকারি কর্মকর্তা হয়ে নিজের বাবা মরহুম মো. আমির হামজার ফৌজদারি মামলার দণ্ডপ্রাপ্তির তথ্য গোপন করে তাকে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২’ দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। সেখানে তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সুপারিশ নেন, যা অসঙ্গত ও শিষ্টাচার বহির্ভূত। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় মামলা রুজু ও অভিযোগ বিবরণী জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ব্যক্তিগত শুনানিসহ সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ হয়। পরে তাকে তিরস্কার নামীয় লঘুদণ্ড দেওয়া হয়।