সৈয়দ আমানত আলী:
‘আমার ছেলে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিল, কিন্তু সড়কেই তার প্রাণ ঝরে গেল। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া হলো না তার’- ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কান্না জড়িত কণ্ঠে এভাবেই বলছিলেন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আলী হোসেনের মা সেলিনা বেগম।
নিহত স্কুল শিক্ষার্থী আলী হোসেনের মা সেলিনা বলেন, সকালে আমার ছেলে হলিক্রস স্কুলের পাশে কোচিং সেন্টারে যাওয়ার জন্য কুনিপাড়া হ্যাপি হোমসের বাসা থেকে বের হয়। তেজগাঁও বিজি প্রেসের সামনে রাস্তা দিয়ে পার হওয়ার সময় অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় আমার ছেলে গুরুতর আহত হয়। তাকে আহত অবস্থায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে তেজগাঁও সরকারি বিজ্ঞান কলেজের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। তার স্কুল দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয়। আমার একটাই ছেলে ছিল। আল্লাহ আমার ছেলেকে নিয়ে গেল। এখন আমি কী নিয়ে বাঁচবো? আমার তো আর কিছুই রইল না।
আলী হোসেনের মা বলেন, আমার স্বামী মিরপুর-১০ নম্বরের হোটেল আল বারাকায় বাবুর্চির কাজ করেন। আমাদের বাড়ি বরিশাল জেলার মুলাদী থানার কৃষ্ণপুর গ্রামে।
নিহতের মামাতো ভাই রুবেল বলেন, আমার মামাতো ভাই অনেক মেধাবী ছাত্র ছিল। অনেক কষ্ট করে তাকে পড়ালেখা করাচ্ছিলেন মামা। স্বপ্ন ছিল সে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হবে, কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইতোমধ্যেই ঘাতক বাস ও চালককে আটকের চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছেন। নিহতের বাবা থানায় এসেছিলেন। মরদেহ ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। সেখানেও আমাদের একটি টিম আছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
উল্লেখ্য, আজ সকাল পৌনে ৭টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার বিজি প্রেসের সামনের রাস্তা পার হওয়ার সময় গাড়ির ধাক্কায় আলী হোসেন নামের ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার