বড়লেখা প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের বড়লেখার কুমারশাইল সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে এবার বাংলাদেশী কৃষকের ৩ টি গরু বিএসএফ নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এর মাত্র দেড়মাস আগে একই এলাকায় অবৈধভাবে প্রবেশ করে আরেক কৃষকের একটি গরু ধরে নিয়ে যায় ভারতীয় নাগরিকেরা। সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠকে বিজিবি বিষয়টি উপস্থাপন করলে বিএসএফ ভারতীয় নাগরিকের গরু ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এবার স্বয়ং বিএসএফ কৃষকের ৩টি গরু ধরে নিয়েও পূর্বের মতো বিজিবিকে তা অস্বীকার করছে।
গত শুত্রবার (০৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে লাতু সীমান্তের ১৩৬৭/৫ এস পিলার এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে বলে ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ঘটনাটি লাতু বিজিবিকে জানানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে উপজেলার কুমারশাইল গ্রামের কৃষক আব্দুল করিম কুমারশাইল চা বাগানের নম্বরে গরু চরাচ্ছিলেন। চা গাছের ফাঁকে ফাঁকে গরুগুলো ঘাস খাচ্ছিল। সন্ধ্যা নামার আগেই হঠাৎ কয়েকজন অস্ত্রধারী বিএসএফ সদস্য সীমান্ত অতিক্রম করে চা বাগানে ঢুকে জোরপূর্বক ৩টি গরু ধরে নিয়ে যায়। গরুগুলো সামনের দিকে এগুতে না চাইলেও তারা প্রহার করে এগিয়ে নেয়। গরুর মালিক কৃষক আব্দুল করিম দূরে আড়াল থেকে তা দেখেও ভয়ে প্রতিবাদ করেননি। এর আগে গত ২৫ জুলাই সীমান্তের একই এলাকার কাটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরে ৫-৬ জন ভারতীয় নাগরিক প্রবেশ করে আব্দুল কাইয়ুমের একটি বড় ষাড় ধরে নিয়ে যায়। এসময় বাধা দিতে গেলে আব্দুল কাইযুমকে তারা পিঠিয়ে আহত করে।
গরুগুলোর মালিক কৃষক আব্দুল করিম বলেন, বাগানের ভেতর তিনি গরুগুলোকে ঘাস খাওয়াচ্ছিলেন। হঠাৎ কয়েকজন বিএসএফ আমাদের এরিয়ায় ঢুকে পড়ে। আমি ভয়ে আড়ালে চলে যাই। তারা আমার তিনটি বড় গরু ধরে নিয়ে যায়। কি-কারণে বিএসএফ আমার গরুগুলো নিয়ে গেল তা বুঝতে পারছি না। ঘটনাটি আমি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি বিজিবিকে জানান।
উত্তর শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ বলেন, কৃষক আব্দুল করিম তার তিনটি গরু বিএসএফ ধরে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন। বিষয়টি তিনি তাৎক্ষণিক লাতু বিজিবি ক্যাম্পের ইনচার্জকে ঘটনাটি জানিয়েছেন। প্রায় দেড় মাস আগে একই এলাকার আব্দুল কাইয়ুম নামে এক ব্যক্তির একটি বড় ষাড় ভারতীয়রা সীমান্ত অতিক্রম করে আমাদের দেশে ঢুকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়। বাধা দিতে গেলে ষাড়ের মালিককে বিএসএফ মারধর করেছে। এই ষাড়টিও বিজিবি এখনও উদ্ধার করে দিতে পারেনি।
বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের লাতু ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার আব্দুল খালেক বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিএসএফের ৩টি গরু ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েই তিনি বিএসএফের নিকট নোট পাঠিয়ে গরুগলো ফেরত দিতে ব্যবস্থার নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা তা অস্বীকার করছে। বিষয়টি এখন রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দেখা হচ্ছে। এর আগে ভারতীয় নাগরিকরা জোরপূর্বক বাংলাদেশী নাগরিকের গরু ধরে নেওয়ার বিষয়টিও বিএসএফ অস্বীকার করেছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার