এডভোকেট মোঃ আমান উদ্দিন:
মোঃ মাহমুদ হাছান খান, পিতা মোঃ ইলিয়াছ আলী খান, মাতা কুতুবজান, গ্রামঃ খাসা, ডাকও থানা বিয়ানীবাজার জেলাঃ সিলেটে জন্ম গ্রহন করেন। ডিপ্লমাইঞ্জিনিয়ার ছিলেন।সুদির্ঘকাল চাকুরী করেছেন।সততা, নিষ্টা, ও আন্তরিকতার সাথে।অবসর গ্রহন করেছেন ২০০০ সালে।
আবসরে যাওয়ার পূর্বে প্রায় একযুগ বাংলাদেশ বিদ্যুতায় বোর্ডের অধীনে খুলনার খলিশপুরে পাওয়ার স্টেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী ছিলেন।একবৎসরকাল চট্রগ্রামের কাপ্তাই পাওয়ার স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত সুপারেনটেন্ড ছিলেন। সেখান থেকে এল.পি.আর নিজ বাড়ীতে চলে আসনে।পেনশনের এককালিন ২২০০০০০/- (বাইশ লক্ষ টাকা) উত্তোলন করে পৈত্রিক ভিটেতে সাদাসিদে ধরনের একখানা ঘর নির্মান, পবিত্র হজ্জ পালন, ছেলে-মেয়েদের বিবাহ কার্যাদি সম্পাদন করেন।
মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত সুখে শান্তিতে দ্বীনি কার্যক্রমে পূর্ন সময় ব্যয় করেন। বাধ্যক্য জানিত রোগে ১লা সেপ্টেম্বর ২০২২ইং তারিখে দিবাগত রাত ১১.৩৫ মিনিটের সময় আমার উপস্থিততে তিনি ইহকাল ত্যাগ করে পরপরে চলে গেলেন।
আমার আত্মীয় স্বজনসহ শুভাকাংখী সকলে শুক্রবার দুপুর ২ ঘটিকার সময় পবিত্র জানাযার নামাজ আদায় এবং মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করি।আল্লাহ এই আদর্শবান মানুষ কে জান্নাতুল ফেরদৌসে স্থায়ী ঠিকানা করে দাও “আমিন”।
উল্লেখকরা প্রয়োজন জনাব হাছান একটি জেলার প্রধান নির্বাহী হয়ে একটি টাকাও অবৈধ উপায়ে আয় করেননি।চাইলে কোন এক মাসের অবৈধ আয় দিয়ে গুলশান,বনানী, বারিধারা, তে বাড়ী গাড়ি সবই করতে পারতেন। কিন্তু সেই অবৈধ আয়ের প্রতি তিনির কোন লোভ লালসা ছিলে না। সেই জন্যই তো দুনিয়াতে সম্মানী ছিলেন আশা করি পরকালে ও আল্লাহ কতৃক পুরষ্কৃত হবেন।কথায় আছে, ‘Honesty is the best life”. সফল মানুষ হিসাবে মাহমুদ হাছান খান অসাধারন। তাঁর পরিবার শতভাগ শিক্ষিত।
সহধর্মীনি আনোয়ারা বেগম ছিলেন পি.ডি.বি এর প্রাইমারী শাখার শিক্ষক।
১ ছেলে ২ মেয়ের জনক । ছেলে আবিদ উজ জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাশ করে যুক্তরাজ্যে স্ব-পরিবারে স্থায়ীভাবে বসবাস করিতেছেন। বড়মেয়ে আফরোজা সুলতানা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্থনীতিতে বি.এ (অনার্স)পাশ করে বর্তমানে বৈরাগীবাজার হাজারি-শাহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে কর্মরত। জেলার শ্রেষ্ট শিক্ষক হিসাবে সরকার কতৃক সনদপ্রাপ্ত। সম্মান সূচক সরকার বাহাদুর থাইল্যান্ডে শিক্ষা সফর ব্যবস্থাপনায় সফর করেছেন।ছোটে মেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাস নিয়ে অনার্স মাস্টার্স করে বর্তমানে সিলেট শহরে বসবাস করিতেছেন। দুই-জামাতা পেশায় একজন আইনজীবি এবং আন্যজন ব্যাংকার। ছেলে মেয়ে সকলেই দাম্পত্য জীবনে সুখী। ছেলে-মেয়ে তাদের সকলেরই সন্তানাদি আছে।
আমার বিয়ে হয়েছে ২০০১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারী। আমি দির্ঘদিন শুশুরজির সান্বিধ্য পেয়েছি। সদা হাস্য উজ্জল ও বিনয়ী ছিলেন।তাহার দর্শন ছিল কেহ বড় আফিসার আবার কেহ ছোট অফিসার কর্মজীবনে ভেদাভেদ করতেন না।অবসর গ্রহনের পর তো সকলেরই সরকারী হিসাব বন্ধ হয়ে যাবে।সুতরাং ভেদাভেদ করে লাভ কি? আরও বলতেন, কেহ উচ্চ শিক্ষত-আবার কেহ অশিক্ষিত তাতেও ভেদাভেদ করতেন না। কারন আমরা সকলেই রক্তে মাংসে মানুষ। দাবী করতে পারি আমি কত সৎ নিষ্টাবান, ত্যাগী, পরোপকারী, ন্যায়নীতি, পরায়ান এসব যত বেশী অর্জন করে শিক্ষাগ্রহন করা যায় এবং তা বাস্তবায়ন করতে পারলেই প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত বলে দাবী করা যেতে পারে। সামাজিক শিক্ষা এবং একাডেমিক শিক্ষার সমন্বয় হলে বড় মাপের মানুষ হওয়া যায়।
আমি কাছে থেকে দেখেছি, আমার শশুড় মাহমুদ হাছান খান উপরোক্ত বর্ননার চেয়ে ও বেশী গুনাবলী সম্পুর্ন ছিলেন।এরপর ও তো বলা যায়না, আল্লাহ চাইলে ক্ষমা করতে ও পারেন। আবার শাস্তি দিতে পারেন ।পরিশেষে শশুড়জির বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি “আমিন”
লেখকঃ সভাপতি, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বিয়ানীবাজার, সিলেট।