কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:
বাবা রফিকুল ইসলাম শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন ৯ মাস আগে। বাবার হারানোর বেদনা ও শোক কাটতে না কাটতেই বজ্রপাতে মারা গেলেন মা। বাবা-মাকে হারিয়ে এখন দিশেহারা ৪ শিশু। এই ৪ এতিম শিশুর দায়িত্ব নেবে কে?
গত ৫ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে বজ্রপাতে মারা যান স্নেহময়ী মা নূরুন্নাহার বেগম। জেলার হোসেনপুর উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের চর হাজীপুর স্বামী হারানোর শোকের বোঝা মাথায় নিয়ে শেষ পর্যন্ত স্ত্রী নুরুন্নাহারের (৪০) এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা এলাকাজুড়ে।
বজ্রপাতে শেষ আশ্রয়স্থল মায়ের স্নেহের আঁচল সরে যাওয়ায় শোকে-দুঃখে দিশেহারা হয়ে ওঠে ৭ বছরের শিশুপুত্র শোয়েব, ৯ বছরের শিশুকন্যা ফাতেমা, ১১ বছরের বৃষ্টি এবং ১৩ বছরের শিশুকন্যা সামিরা। এমন ঘোর দুর্দিনের শিকার এবং স্নেহ-ভালোবাসা হীন হয়ে তারা সারাদিন মায়ের কবরের পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে স্নেহের আঁচলের ছায়া খোঁজে।
সাবিনা নামে তাদের এক বড় বোন থাকলেও দূর গ্রামে অসচ্ছল পরিবারে বিয়ে হয় তার। সেই অসচ্ছল পরিবারের গৃহবধূ বড় বোন সাবিনা এখন স্নেহের ছোট ৪ ভাই বোনকে নিয়ে দুঃখের সাগরে ভাসছেন। ছোট ৪ ভাইবোনকে নিয়ে ভবিষ্যৎ চিন্তায় দিশেহারা বড় বোন সাবিনা আক্তার।
স্থানীয় প্রশাসন, দাতা সংস্থা কিংবা হৃদয়বান কোনো ব্যক্তি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে না দিলে ওই এতিম চার শিশুও হয়তো অযত্ন অবহেলায় একে একে অকালে ঝরে পড়বে। এমন পরিস্থিতি সামলে নিতে সাবিনা আক্তার সবার কাছে মানবিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
হোসেনপুর উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মুহিত বলেন, বাবার পর বজ্রপাতে মা মারা যাওয়া ওই চার শিশু অসহায় হয়ে পড়েছে। তারা তার দরিদ্র বড় বোনের বাড়িতে রয়েছে। তাদের বড় বোনও খুব অসহায়। ছোট ৪ ভাই ও বোনের দায়িত্ব নেওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি তাদের সামান্য সহযোগিতা করে যাচ্ছি। কোনো দাতা সংস্থা কিংবা হৃদয়বান ব্যক্তি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে না দিলে ওই এতিম ৪ শিশুর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে।