স্টাফ রিপোর্টার:
পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, এলাকার মানুষ সবাই খুঁজেছেন সাম্মিকে নিখোঁজের ৫ দিনের মাথায় সাম্মির বস্তাবন্দি মরদেহ মিললো বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরের জঙ্গলে।
কিন্তু সাম্মিকে খুন করলো কারা? কেনইবা সাম্মি খুন হলো। এসব প্রশ্নের উত্তর এখনো মেলেনি। এখনো পযন্ত পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। অনুসন্ধান চালিয়েছে পুলিশ, গোয়েন্দারাও সরব। এরপরও সাম্মির খুনিদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে জকিগঞ্জে চলছে ক্ষোভ। এমন ঘটনা জকিগঞ্জে নিকট অতীতে ঘটেনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সাম্মি আক্তার, বয়স সাত বছর। জকিগঞ্জ পৌর শহরের পীরের চক এলাকার আজমল হোসেনের মেয়ে সে। ভরণ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়ে সাম্মি। সাম্মির পিতা জকিগঞ্জ থানার বাবুর্চি। থানার পাশেই তাদের বাসা।
পরিবারের লোকজন সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ঠা সেপ্টেম্বর বিকাল বেলা। মা রওশনআরা বেগমের কাছে খাবার আবদার করেছিল শিশুকন্যা সাম্মি আক্তার। মা তাকে খাবারও দেন। মায়ের দেয়া খাবার খেয়ে সাম্মি ঘর থেকে বের হয়ে যায়। রাস্তার পাশেই বাড়ি। এ কারণে সাম্মি খেলাধুলা করে রাস্তায়। পাড়ার অন্য ছেলেমেয়েরাও বিকালে আসে খেলতে। সাম্মি তাদের সঙ্গে খেলতে যায়। বিকালের দিকে সাম্মিকে ছেলে মেয়েদের সঙ্গে খেলা করতে দেখেছেন অনেকেই। আবার কেউ কেউ তাকে লঞ্চঘাটের দিকে যেতেও দেখেছেন। ওই দিন সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরেনি সাম্মি। পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজেন এলাকায়। কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি। রাত থেকেই শুরু হয় মাইকিং। সাম্মির সন্ধান চেয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে গোটা পৌর শহরে দু’দিন মাইকিং করা হয়। কিন্তু সাম্মি আক্তারের খোঁজ মেলেনি। ঘটনার ৫ দিন পর শুক্রবার সন্ধ্যার পর কেছকি জঙ্গলে বস্তাবন্দি অবস্থায় পচা দুর্গন্ধ পান স্থানীয়রা। এতে সন্দেহ হয় কেছকি জঙ্গলের আশপাশের মানুষের। তারা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে জকিগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে। পরে বস্তার মুখ খুলে দেখা যায় লাশটি নিখোঁজ শিশু সাম্মি আক্তারের। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, লাশ ফুলে গিয়ে পচন ধরেছে। এ কারণে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। বস্তার মুখ খোলার পর সাম্মির পিতা গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। ঘটনা জানাজানি হলে জকিগঞ্জে আতঙ্ক দেখা দেয়। নিহত সাম্মির মরদেহের গলায় দাগ ছিল।
এ কারণে ধারণা করা হয়; সাম্মিকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে- লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গত শনিবার নিহত সাম্মি আক্তারের মরদেহ কবর দেয়া হয়েছে। কিন্তু লাশ উদ্ধারের ৬ দিন হয়ে গেলেও পুলিশ আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের কূলকিনারা করতে পারেনি। কারা সাম্মিকে খুন করেছে। কেন খুন করা হয়েছে সবই এখনো অজানা। জকিগঞ্জ থানার ওসি মোশারফ হোসেন জানান, সাম্মির লাশ উদ্ধারের পর থেকে পুলিশ ঘটনার সব ধরনের তদন্ত চালাচ্ছে। লাশ উদ্ধারের স্থল জনাকীর্ণ এলাকা। বাজার রয়েছে। প্রচুর মানুষের চলাচল রয়েছে। এ ছাড়া, বহিরাগত মানুষের বসবাস এখানে। এ কারণে সাম্মির খুনিকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে- পুলিশ তদন্ত, অনুসন্ধান সবই করছে।
এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করে খুনিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি জানান, সাম্মির মরদেহে তেমন কোনো স্পট ছিল না। তবে- তার গলায় রশির দাগ রয়েছে। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে; শ্বাসরুদ্ধ করেই সাম্মিকে খুন করা হয়েছে। লাশ ফুলে পচন ধরার কারণে অন্যকোনো আঘাতের চিহ্ন দৃশ্যমান হয়নি। ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ওই রিপোর্টে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে। নিহত সাম্মির পিতা ও জকিগঞ্জ থানার বাবুর্চি আজমল হোসেন জানিয়েছেন, সাম্মি নিখোঁজ হওয়ার পর আমরা খোঁজাখুঁজি করেছি।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 998 বার