সিলেটThursday , 15 September 2022
  1. আইন-আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. উপ সম্পাদকীয়
  4. খেলা
  5. ছবি কথা বলে
  6. জাতীয়
  7. ধর্ম
  8. প্রবাস
  9. বিচিত্র সংবাদ
  10. বিনোদন
  11. বিয়ানী বাজার সংবাদ
  12. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
  13. ব্রেকিং নিউজ
  14. মতামত
  15. রাজনীতি

৬ সদস্যের চারজনই প্রতিবন্ধী, সংসার চলছে ভিক্ষা করে

admin
September 15, 2022 1:14 pm
Link Copied!

শেরপুর প্রতিনিধি:
এক পরিবারে সদস্য সংখ্যা ছয়জন। তার মধ্যে চারজনই শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। তাদের নেই জাতীয় পরিচয়পত্র। ফলে পাচ্ছেন না সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা। ভিক্ষাবৃত্তি করে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। বলছিলাম শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের উত্তর দাড়িয়ারপাড় গ্রামের মৃত আব্দুল আলীর পরিবারের কথা। তার এক ছেলে ও তিন মেয়ে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী।

পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ৩০ বছর আগে স্ত্রী ও পাঁচ সন্তান রেখে মারা যান আব্দুল আলী। স্ত্রী আমেলা বেগম শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে অকূল সাগরে পড়েন। সন্তানদের ভরণপোষণের তাগিদে পাড়ি জমান ঢাকায়। সেখানে বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সন্তানদের ভরণপোষন করতেন। তাদের দুঃখ-দুর্দশা দেখে ঢাকার এক হৃদয়বান ব্যবসায়ী আমেলা বেগমের বাড়িতে থাকার একটি ঘর নির্মাণ করে দেন। কিছু দিন পর আমেলা বেগম সন্তানদের নিয়ে বাড়িতে এসে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন।

আমেলা বেগমের বয়স এখন ১০৬ ছুঁই ছুঁই। বয়সের ভারে নুয়ে পড়ছেন তিনি। আর্থিক সংকটে ছেলে-মেয়েদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে পারেননি। তাদের ঘরে চকি বা কোনো খাট নেই, নেই বিদ্যুতের আলো। রাতে মেঝেতে পাটি বিছিয়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমান।

বৃদ্ধ আমেলা বেগমের বড় মেয়ে আবেদা বেগম জানান, মা ও তিনি শুধু সুস্থ। তার ছোট বোন আফরোজা, দোলেনা, অজুফা ও ছোট ভাই আলী হোসেন মানসিক ভারসাম্যহীন। ছোট তিন বোন ও মায়ের আজও জাতীয় পরিচয়পত্র হয়নি।জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় মিলছে না সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা। শারীরিকভাবে অসুস্থ হলেও অর্থের অভাবে চিকিৎসা নিতে পারছেন না তারা।

প্রতিবেশী আব্দুল আজিজ বলেন, ৩০ বছর আগে আমেলা বেগমের স্বামী মারা যায়। পরে তারা ঢাকায় বাসা-বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দুই বছর ধরে গ্রামে আইছে (আসছে)। তাদের ভোটার আইডি কার্ড না থাকায় সরকারি কোনো কিছু পাইতেছে না। অসুখ-বিসুখে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারে না।

প্রতিবেশী অজুফা বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর আমেলা বেগম দু’মুঠো ভাতের আশায় সন্তানদের নিয়ে পাড়ি জমান ঢাকা শহরে। সেখানে হোটেল ছাড়াও অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ ও ভিক্ষাবৃত্তি করে দিন চলত তাদের। এমন অবস্থা দেখে ঢাকার এক ব্যবসায়ী তাদের নিয়ে যান বাড়িতে। এরপর স্বামীর রেখে যাওয়া বসতভিটায় একটি টিনের ঘর নির্মাণ করে দেন।

আবেদা বেগম বলেন, আমি সুস্থ থাকায় অনেক আগেই বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর থেকে স্বামীর সংসারে আছি। ছোট ভাই মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায়, কোথাও স্থির থাকে না। বর্তমানে বৃদ্ধা মাকে নিয়ে বাড়িতে থাকে দোলেনা, আফরোজা ও অজুফা। ভিক্ষাবৃত্তি করেই জীবিকা নির্বাহ করছে তারা।

ধানশাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, ৬ নং ওর্য়াডের উত্তর দাড়িয়ারপাড় গ্রামের ওই পরিবারের কেউ ভোটার হয়নি। ফলে তারা সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, পরিবারটিকে ভোটার তালিকায় আনতে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করব। দুঃস্থ এই পরিবারটিকে বাঁচাতে প্রয়োজন সরকারি, বেসরকারি ও সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা। তাহলে মানবতার রঙে বেঁচে থাকার আশায় প্রতিবন্ধকতাকে জয় করতে পারবে তারা।