আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
এক ভণ্ড সাধু তাদের বলেছিল, ‘মানুষকে বলি দিলেই আর্থিক সমৃদ্ধি হবে’। আর তাই এক দম্পতি দুই নারীকে বলি দেন। শুধু তাই নয়, তাদের মাংস রেঁধেও খান ওই দম্পতি। ভারতে কেরালায় ঘটেছে এমন ঘটনা। এ ঘটনায় দুজনকে আটক এবং একজনকে গ্রেপ্তার করেছে সেখানকার পুলিশ।
পুলিশ জানায়, বলি হওয়া দুই নারী লটারির টিকিট বিক্রি করতেন। তিন মাস আগে তাদের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করে পরিবার। পুলিশ ভগবল সিংহ ও তার স্ত্রী লালিয়ার বাড়ির পেছনের মাটি খুঁড়ে নিখোঁজ ওই দুই নারীর টুকরো করা দেহাবশেষ উদ্ধার করে। পরে ডিএনএ পরীক্ষা করে দেহগুলো শনাক্ত করে স্থানীয় কোচি থানার পুলিশ।
জানা যায়, অপহৃত দুই নারীকে প্রথমে খুন করেন ওই দম্পতি। এরপর তাদের দেহ টুকরো টুকরো করেন তারা। কিছুটা অংশ রেখে দেন রান্না করে খাওয়ার জন্য। বাকি অংশ মাটিতে পুঁতে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। জানা গেছে, এক নারীর স্তন কেটে বের করে নেওয়া হয় সব রক্ত। এরপর সেই অংশটি ৫৬ টুকরো করা হয়। রান্না করে খাওয়ার পর দেহের বাকি অংশগুলোকে পুঁতে ফেলার পরিকল্পনা ছিল ওই দম্পতির।
কোচির পুলিশ কমিশনার সিএইচ নাগারাজু বলেন, প্রধান অভিযুক্ত সাফি ওই দম্পতিকে বুঝিয়েছিল যে প্রথম বলিতে তাদের আর্থিক অবস্থার বিশেষ কোনো উন্নতি হয়নি। প্রথমবারের নরবলিতে হয়ত কোনো প্রথায় ভুল হয়ে গিয়েছিল। সেই কারণেই দ্বিতীয় বলি দিতে হবে। প্রথমে ওই নারীদের খুন করে তাদের দেহ টুকরো টুকরো করেন তারা। এরপরই কিছুটা অংশ খান এবং বাকি অংশটি পুঁতে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
উদ্ধার হওয়া দুটি মরদেহে যে আঘাতের চিহ্নগুলো পাওয়া গেছে, তা দুই বছর আগে একটি যৌন নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে মিলে যায়। ৭৫ বছর বয়সী এক নারীকে যৌন নির্যাতন করেছিলেন অভিযুক্ত সাফি। জুন মাসে প্রথম নরবলি দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। ওই ঘটনায় দেহ কেটে মাংস রান্না করে খাওয়ার তথ্য উঠে আসলেও এখন পর্যন্ত তা প্রমাণ করার মতো তথ্য মেলেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত আট মাস আগে। যখন সাফি ওরফে রশিদ নামের এক ব্যক্তি সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেন, তার টোটকা মেনে চললেই ধনবান হওয়া যাবে। পাঠানমথিত্তার ওই দম্পতি ভণ্ড সাধুর ওই বিজ্ঞাপন পড়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সাফি মাসের পর মাস ওই দম্পতিকে বোঝাতে থাকেন, নরবলি দিলেই তাদের ভাগ্যে ধনসম্পদ নিশ্চিত।
কোচির পুলিশ জানায়, রোশিলি নামক এক লটারি টিকিট বিক্রেতাকে ভুল বুঝিয়ে ওই দম্পতির বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে বিভিন্ন নিয়ম-রীতি মেনে তাকে হত্যা করা হয়। সবার আগে তার দেহ থেকে মাথা ছিন্ন করে বাকিটা টুকরো টুকরো করে কবর দেওয়া হয়। তবে ওই ঘটনার বেশকিছু দিন পরও দম্পতির আর্থিক অবস্থার কোনো রকম উন্নতি না হওয়ায় দম্পতি সাফির কাছে জবাব চান। সাফি তাদের বোঝান, আরও একজনকে বলি দিলে তবেই তাদের মন্দা কাটবে। সাফির সাহায্য নিয়েই দ্বিতীয় নারী পদ্মাকে খুন করেন দম্পতি। এই জন্য সাফিকে তারা লাখ লাখ টাকাও দেন। দ্বিতীয় নারীর ফোন ট্র্যাক করেই সাফির খোঁজ পায় পুলিশ।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার