ফেনী প্রতিনিধি:
ফেনীর দাগনভূঁঞায় পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অপরাধে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুল করিম খান বাহাদুর (৫৫) কে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।
বুধবার বিকেলে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ ওসমান হায়দার এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে ফেনী জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত মোহাম্মদ আবদুল করিম খান বাহাদুর ফেনীর দাগনভূঁঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের খুশীপুর গ্রামের আলতাফ আলীর ছেলে। তিনি উপজেলার খুশীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
মামলার নথির বরাত দিয়ে ফেনীর নারী ও শিশু আদালতের সরকারি কৌসুলি (পিপি) হাফেজ আহম্মদ জানান, দাগনভূঁঞা উপজেলার খুশীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল করিম খান বাহাদুর বিদ্যালয়ে গণিত ও বিজ্ঞান বিষয় পড়াতেন।
গত ২০১৯ সালের ২৮শে মার্চ সকালে মাস্টার আবদুল করিম একই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে স্কুলে যেতে বলেন। সে সময়ে স্কুলে আর কোন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ছিল না। এ অবস্থায় ওই শিশু ছাত্রীকে একটি শ্রেণি কক্ষের মধ্যেই নানা প্রলোভনে ধর্ষণ করেন। এসময় বিষয়টি কাউকে জানাতে নিষেধ করেন এবং জানালে ওই ছাত্রী ও তার পরিবারের নানা ধরনের ক্ষতি হবে বলে শাসিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পর ওই প্রধান শিক্ষক আরও কয়েকবার নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন।
কিছু দিন পর প্রধান শিক্ষকে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়। এঘটনায় ওই ছাত্রীর বড় বোন বাদী হয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল করিম খান বাহাদুরকে আসামি করে ২০১৯ সালের ৫ই এপ্রিল দাগনভূঁঞা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
দাগনভূঁঞা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোবারক হোসেন মামলাটি তদন্ত শেষে একমাত্র আসামি মো. আবদুল করিম খান বাহাদুরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আদালত দীর্ঘ শুনানিকালে মামলায় বাদীসহ মোট ১৪ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণকরা হয়েছে।
পরে বুধবার আদালত রায় প্রদান করেন।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার