সিলেট কন্ঠ রিপোর্ট:
শ্যাম সুন্দর রায় ভালোবেসে বিয়ে করেছেন হেমা শর্মাকে। কিন্তু বিয়ের পর আর সংসার করা হয়ে উঠেনি তাদের। স্ত্রীকে বেআইনিভাবে আটকে রাখার অভিযোগ করেছেন শাশুড়ি ও মামা শ্বশুরদের বিরুদ্ধে। সেই আটকাদেশ থেকে স্ত্রীকে উদ্ধারে হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয়েছেন স্বামী শ্যাম সুন্দর। তার করা রিট আবেদনের শুনানি শেষে হেমা শর্মাকে ১৩ নভেম্বর আদালতে হাজির করতে তার মা সাবিত্রী রায় ও মামা গণেশ শর্মা ও নারায়ণ শর্মাকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
তারা যেন নির্বিঘ্নে আদালতে হাজির হতে পারেন সেই বিষয়ে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে হেমা শর্মাকে যেন দেশের বাইরে না পাঠানো হয় সেই বিষয়েও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ১৩ জানুয়ারি ধর্মীয় নিয়ম মেনে শ্যাম সুন্দর ও হেমা শর্মা উভয়রে সম্মতিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এর আগে গত বছরের ২১ নভেম্বর রংপুরের নোটারি পাবলিকে এফিডেভিট সম্পন্ন করেন তারা। বিয়ের বিষয়টি জানার পর হেমাকে পরদিন ভোর রাতে জোর করে তুলে নিয়ে যায় তার পরিবার। পরে এ বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে আবেদন করেন শ্যাম। কিন্তু কমিশন কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় হাইকোর্টে রিট করেন তিনি।
ওই রিটে বলা হয়েছে, শ্যামের বয়স ২২ বছর, আর হেমার ১৯ বছর। হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৩ এর বিধি ২২(১)(ক) অনুযায়ী দুজনে বিয়ে নিবন্ধিত হয়। দুজনের বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জে। কিন্তু বিয়ের পরদিনই তার স্ত্রীকে তার কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে স্ত্রীর ফোন পেয়ে তার কাছ থেকে জানতে পারেন যে তার বয়স ১৫ বছর দেখিয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রে (আসক) রেখে গেছেন তার মামা গণেশ শর্মা। পরে সেখান থেকে ২৫ মে মামা বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এরপর থেকে তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারছেন না।
রিটে আরও বলা হয়েছে, আইনানুযায়ী তারা এখন স্বামী স্ত্রী। কেউ তাদের এই পবিত্র সম্পর্ককে অস্বীকার করতে পারে না। কিন্তু এই বিয়ে মেয়ের মা ও মামারা মেনে নিতে পারছেন না। ইতিমধ্যে তার স্ত্রীকে বিদেশে পাঠাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। ভিসাও যোগাড় করে ফেলেছেন।
রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজি, রংপুর পুলিশ সুপার, বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সাত জনকে বিবাদী করা হয়েছে। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, দুজনেই পারস্পারিক সম্মতির ভিত্তিতে বিয়ে করেছেন। তারা প্রাপ্তবয়স্ক। কিন্তু মেয়ের বয়স কমিয়ে দিয়ে নতুন করে জন্মসনদ তৈরি করেছেন তার মা। যাতে বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। শুনানি শেষে হাইকোর্ট হেমা শর্মাকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন।