মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন এক তরুণী (২৩)। বুধবার (২ নভেম্বর) সকাল থেকে উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের দক্ষিণ চলবল গ্রামের ৮নং ওয়ার্ডে প্রেমিক শৈশব বালার বাড়িতে তিনি অবস্থান নিয়েছেন। শৈশব বালা ওই গ্রামের দুলাল বালার ছেলে। ওই তরুণী পিরোজপুরের স্বরুপকাঠী উপজেলার বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে ওই তরুণী প্রেমিক শৈশব বালার বাড়িতে গেলে প্রেমিকের মা, ভাই ও ফুফু তাকে মারধর করেন এবং বিভিন্ন হুমকি দেন। পরবর্তীতে স্থানীয় সাংবাদিকরা সেখানে গেলে শৈশব বালার বাবা-মা ও ভাই ঘরে তালা দিয়ে বাড়ি থেকে চলে যান।
ওই তরুণী জানান, দুই বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় তাদের। এরপর থেকেই একে অপরের সঙ্গে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর মধ্যে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন প্রেমিক শৈশব বালা। এতে ওই তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। পরে বিয়ের কথা বলে জোর করে গর্ভপাত করান শৈশব বালা ও তার ফুফু যমুনা বালা। এরপর থেকেই প্রেমিকাকে এড়িয়ে চলেন শৈশব বালা ও তার পরিবার।
ওই তরুণী বলেন, বিষয়টি জানাজানি হলে পারিবারিকভাবে আমরা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে শৈশব বালার পরিবারের কাছে যাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে বিয়ে না করার জন্য বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হয়। গত ১০ দিন ধরে আমার সঙ্গে শৈশব বালা যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। শৈশব বালা যদি আমাকে বিয়ে না করে, তাহলে আমি আত্মহত্যা করব।
শৈশবের ফুফু যমুনা বালা বলেন, এই মেয়ের আগে একটা বিয়ে হয়েছিল। এ যুগের ছেলে-মেয়েরা প্রেম করতেই পারে। আমাদের ছেলে কেন এই মেয়েকে বিয়ে করবে। এই মেয়ে একজন প্রতারক।
এদিকে শৈশব বালার মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরিবারের দাবি- শৈশব কক্সবাজারের রামুতে আছে সেখানে। নেট না থাকার কারণে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।
শৈশব বালার বাবা বাবুল বালা বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তার আগে একটা বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের বিষয়টি সে গোপন রেখে আমার ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করেছে। যখন আমার ছেলে বিষয়টি জানতে পারে, তখন বিয়েতে না করেছে।
বিয়ের বিষয়ে ওই তরুণী বলেন, সম্পর্ক হওয়ার আগে আমি তাকে বলেছি, আমার আগে একটা বিয়ে হয়েছে। সব কিছু মেনে নিয়ে সে আমার সঙ্গে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে প্রেম করেছে। আমাকে বলেছে- তার কোনো বোন নেই। তাই তার মা আমাকে মেয়ের মতো করে রাখবে।
সাবেক ইউপি সদস্য বাবুল জয়ধর বলেন, এই মেয়ের সঙ্গে শৈশব বালার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এ বিষয়ে মেয়ের বাড়িতে ১০-১২জন লোকও গেছিল। কেন যে মেয়েটাকে কষ্ট দিতেছে বুঝি না। এ বিষয়ে অনেকবার সালিস হইছে। ওরা কাউকে মানে না।
নবগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দুলাল তালুকদার বলেন, ঘটনা আমি শুনছি। কিন্তু ওই মেয়ের সঙ্গে তো আরও ছয় মাস আগে বিয়ে হওয়ার কথা। এখনো হয়নি?
ডাসার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে এখনো থানায় কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার