স্টাফ রিপোর্টার:
শনিবার (১৯ নভেম্বর) সকাল থেকেও খণ্ড খণ্ড মিছিল সহকারে বিভিন্ন স্থানের নেতাকর্মীরা আলিয়া মাদরাসা মাঠে ছুটে আসছেন। সিলেট নগরীর চিত্র যেন বিএনপির দখলে সিলেটের রাজপথ।
নগরীর বিভিন্ন সড়ক থেকে সমাবেশের দিকে মিছিল অগ্রসর হচ্ছে। সমাবেশের আগেই মাঠ কানায় কানায় ভর্তি হয়ে রাস্তায়ও লোকসমাগত হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বিএনপি নেতারা।
নিত্যপণ্যের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তির দাবিতে সিলেটে বিএনপির গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ২টায় সিলেট মহানগরের চৌহাট্টা এলাকার আলিয়া মাদরাসা মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ইতোমধ্যে সিলেট এসে পৌঁছেছেন।
এদিকে, গণসমাবেশের সকল প্রস্তুতি শুক্রবার বিকেলের মধ্যেই শেষ করেছে সিলেট বিএনপি। বিভাগজুড়ে ডাকা গণপরিবহন ধর্মঘটের কারণে একদিন আগেই ভরে গেছে আলিয়া মাদরাসা মাঠ। শুক্রবার বিকেলেই পুরো মাঠ নেতাকর্মীতে পূর্ণ হয়ে যায়। রাতেও কিছুক্ষণ পরপর মিছিল সহকারে বিভিন্ন স্থানে থেকে আসতে থাকেন নেতাকর্মীর। শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত আলিয়া মাঠ হয়ে উঠে উৎসবের ময়দান।
এর আগে শুক্রবার বিকেলেই মিছিলের মহানগরে পরিণত হয় সিলেট। দুপুরের পর থেকে খণ্ড খন্ড মিছিল নিয়ে আলিয়া মাঠে আসেন বিভিন্ন স্থানের বিএনপি নেতাকর্মীরা।
বিকেলে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকশ’ মোটরসাইকেল নিয়ে মিছিল সহকারে আসেন নেতাকর্মীরা।
এছাড়াও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর-মধ্যনগরসহ ভাটি অঞ্চলের উপজেলাগুলো থেকে বেশ কিছু নৌকাযোগে বিএনপি নেতাকর্মীরা ছুটে আসেন সমাবেশস্থলে।
সমাবেস্থলে আগাম আসা হাজার হাজার নেতাকর্মীদের সিলেট জেলা ও মহানগরসহ বিভিন্ন এলাকার নেতারা ক্যাম্প তৈরি করে এবং কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করে রাখেন। তাদের খাবারেরও ব্যবস্থা করেন এসব নেতা।
এদিকে বিএনপির এই গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে ধর্মঘটের কবলে পড়েছে পুরো সিলেট বিভাগ। সিলেট জেলায় দুটি পরিবহন শ্রমিক সংগঠন সাংঘর্ষিক দাবি নিয়ে ডেকেছে ধর্মঘট। বাকি ৩ জেলার মধ্যে হবিগঞ্জে অনির্দিষ্টকালের এবং মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জে শনি-রবিবার এই দুইদিন পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিক নেতারা।
আজ শনিবার সিলেটে জেলা বাস-মিনি বাস মালিক সমিতি ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা সকাল-সন্ধ্যার ধর্মঘট শুরু হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে এ ধর্মঘট। চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
প্রথমে বুধবার ধর্মঘটের ডাক দেয় সিলেট জেলা পরিবহন মালিক সমিতি। তারা ৩টি দাবিতে শনিবারের ধর্মঘটের ডাক দেন। দাবিগুলো হচ্ছে- সিলেটে রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করা, নতুন করে অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন না দেয়া, অটোরিকশায় ৩ জনের বেশি যাত্রী পরিবহন না করা ও চালকের আসনের পাশে গ্রিল লাগানো।
পরদিন (বৃহস্পতিবার) জেলা গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নতুন করে ৪টি দাবি তুলে শনিবারের ধর্মঘটের ডাক দেয়। দাবিগুলো হচ্ছে- যেসব অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন নেই সেসেব অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন প্রদান, সিলেটের সবকয়টি পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি প্রদান, সিলেটের লামাকাজী ও শ্যাওলা সেতুতে টোল আদায় বন্ধ এবং হাইওয়ে সড়কে ব্যাটারিচালিত টমটম ও রিকশার চলাচল বন্ধ করা।
জেলা বাস-মিনি বাস মালিক সমিতি শুধু বাস ধর্মঘটের ডাক দিলেও জেলা গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ শনিবার সব ধরনের পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়।