স্টাফ রিপোর্টার:
কেউ কেউ গোল হয়ে বসে তালে তালে স্লোগান দিচ্ছেন, কেউ আবার অবিরত গেয়ে যাচ্ছেন জাগরণের গান। কেউ আবার দল বেঁধে মাঠের চারপাশ ঘুরে বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা নেতাকর্মীদের দেখছেন। কোনো কোনো পেন্ডেলে চলছে বিপ্লবী বক্তব্য। অজানা কেউ এসে প্রথমে দেখলে ভাববেন এটা হয়তো কোনো মেলার মাঠ, চারিদিকে মেলার স্টল আর মাঝখানে উন্মুক্ত মাঠে উপচে পড়া ভিড় জমিয়েছেন দর্শনার্থীরা।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে বিএনপির মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) রাতে বিভিন্ন জেলা, উপজেলা থেকে আসা নেতাকর্মীদের মধ্যে এমনই উৎসব উৎসব আমেজ বিরাজ করছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে এমন উৎসাহ উদ্দীপনা দেখে বোঝার উপায় নেই যে পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা করে নানা বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে এখানে এসেছেন। গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় কেউ নৌকায় দুদিন পাড়ি দিয়ে আজ এসে পৌঁছেছেন। কেউ দুদিন আগে থেকেই এসে পৌঁছেছেন সমাবেশ স্থলে। কেউ বা গাড়ি না পেয়ে হেঁটে এসেছেন সমাবেশে যোগ দিতে। পথে পথে পোহাতে হয়েছে নানা ভোগান্তি।
সিলেটের জৈন্তাপুর থেকে এসেছেন ষাটোর্ধ্ব মোতাব্বির হোসেন। তিনি বলেন, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। জিনিসপত্রের দাম অনেক হওয়ায় বাজারে গিয়ে কিছু কিনতে পারি না। এভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরার চেয়ে সমাবেশে এসে রাত কাটানো ভালো। শীতের মধ্যে রাত কাটাবেন কীভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য দাঁড়িয়ে থেকে রাত কাটাবো। শুধু একদিন নয়, তিন মাস এমন ভাবে সমাবেশে থাকতে পারব।
সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক হুশিয়ার আলম বলেন, পরিবহন সচল থাকলে সমাবেশের দিন আসতাম। তবে পরিবহন বন্ধ থাকায় একদিন আগে চলে এসেছি। এখানের পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে আরও আগে আসা উচিত ছিল। সবার মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব বিরাজ করছে।
স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মাহমুদুল হাসান মিলন বলেন, আমরা অনেক সময় কয়েকজন মিলে একদিনের পিকনিকের আয়োজন করি। মনে হচ্ছে—এখানে হাজার হাজার মানুষ পিকনিকে এসেছেন। তবে পথিমধ্যে অনেক বাঁধা-বিপত্তি পেরিয়ে এসেছি। উৎসবের সঙ্গেই আমাদের বিভাগীয় সমাবেশ শেষ হবে।
এদিকে গণসমাবেশের সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। মূল মঞ্চে ব্যানার টানানোর পাশাপাশি জমা করে রাখা হয়েছে চেয়ার। বসানো হয়েছে সাউন্ড সিস্টেম। সেই সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করে চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে বিএনপির দলীয়, গণজাগরণ ও দেশাত্মবোধক নানা ধরনের গান পরিবেশন করছেন শিল্পীরা। আর তা উপভোগ করে রাত পার করছেন সিলেট বিভাগের দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসা বিএনপির নেতাকর্মীরা।