সিলেটSunday , 20 November 2022
  1. আইন-আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. উপ সম্পাদকীয়
  4. খেলা
  5. ছবি কথা বলে
  6. জাতীয়
  7. ধর্ম
  8. প্রবাস
  9. বিচিত্র সংবাদ
  10. বিনোদন
  11. বিয়ানী বাজার সংবাদ
  12. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
  13. ব্রেকিং নিউজ
  14. মতামত
  15. রাজনীতি
সবখবর

বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন সৌদি যুবরাজ

Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার:
সুবিধাজনক সময়ে ২০২৩ সালে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ। বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ইতিহাসে এই সফর একটি যুগান্তকারী ঘটনা হবে এবং এটি বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে দু’দেশের সম্পর্ক সুসংহত করবে।

শনিবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসেফ ইসা আল দুহাইলান এ কথা জানান। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার।

বৈঠকে সৌদি রাষ্ট্রদূত সৌদি আরবের যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আমন্ত্রণ গ্রহণের একটি স্বীকৃতিপত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন। যুবরাজ চলতি বছরের ৩০ আগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে প্রস্তাবিত বাংলাদেশ সফরে সম্মতি দিয়েছেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ১৯৮৫ সালের পর সৌদি যুবরাজ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের ঢাকা সফরের পর এটিই হবে কোনো সৌদি যুবরাজের প্রথম বাংলাদেশ সফর। ইসা ইউসেফ বলেন, সুতরাং এই সফর উভয় দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে এবং কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে সফরের তারিখ এবং সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে। এখন উভয় দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সফরের রূপরেখা তৈরির কাজ করবে।

সৌদি যুবরাজ সফরের সময় বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারক এবং চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে, যা দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে উল্লেখযোগ্যভাবে দৃঢ় করবে বলে রাষ্ট্রদূত আশা করেন।

বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে বিশেষ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সৌদি যুবরাজের সফরের মাধ্যমে এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার হবে এবং সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্রে সম্প্রসারিত হবে।

জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশিদের হৃদয়ে সৌদি আরবের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। আমাদের সম্পর্ক সময়ের সঙ্গে উচ্চ থেকে উচ্চতর হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে তেল শোধনাগার স্থাপন, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং হালাল খাদ্য শিল্পে বিনিয়োগসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে আরও সৌদি বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সৌদি উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ করে মিরসরাই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য বাংলাদেশে বিশেষ জমি বরাদ্দ করতে প্রস্তুত।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশিদের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। সৌদি আরব এখানে বিনিয়োগ করলে ভালো রিটার্ন পাওয়া যাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সৌদি বিনিয়োগ বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা পাবে।

জবাবে সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীর ইঙ্গিতের প্রশংসা করে বলেছেন যে তিনি সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথভাবে অবহিত করবেন। তিনি বৈঠকে আরও অবহিত করেন যে বাংলাদেশে প্রকৃতপক্ষে সৌদি বিনিয়োগের কিছু উদ্যোগ চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, সৌদি ফাস্ট-ফুড সার্ভিস কোম্পানি ‘হারফি’সহ বেশ কয়েকটি সৌদি ব্র্যান্ড বাংলাদেশে খুব ভালো ব্যবসা করছে। আমরা দুই মুসলিম ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের মধ্যে একটি কার্যকর সহযোগিতা করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি। কূটনীতিক বলেন, সৌদি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পে অংশ নিতে আগ্রহী।

এটি অনাবিষ্কৃত সহযোগিতার একটি বিশাল ক্ষেত্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত মাসে সৌদি যুবরাজ পাঁচটি দেশে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি তহবিল বরাদ্দ করেছেন। বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পের জন্য এই ধরনের তহবিল পাওয়া গেলে বাংলাদেশ সৌদি বিনিয়োগ থেকে লাভবান হবে এমন একটি দেশ হতে পারে।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে মেগা প্রকল্পে বিনিয়োগে সৌদি আরবের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রশংসা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ মুসলিম উম্মাহ তথা বাংলাদেশের জনগণের বৃহত্তর কল্যাণে সৌদি আরবসহ সব মুসলিম দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে।

সৌদি কূটনীতিক অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও ১১ লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বিশেষ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, ‘এটি অত্যন্ত উদার মনোভাব।’ তিনি আশ্বস্ত করেন যে সৌদি আরব আন্তর্জাতিক ফোরামে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থানকে সমর্থন করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। ‘এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বোঝা’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশি ও সৌদি বিনিয়োগকারীদের যৌথ উদ্যোগে সৌদি আরবে সার কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব করেন। জবাবে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের প্রস্তাব নিয়ে কাজ করতে হবে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী একটি বিলম্বিত পেমেন্ট শিডিউলের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অশোধিত ও পরিশোধিত উভয় ধরনের তেল কেনার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করে বলেন, ‘সৌদি আরব প্রস্তাবটি বিবেচনা করলে ক্রমবর্ধমান শিল্পের চাহিদা মেটানো আমাদের পক্ষে ভাল হবে। আমাদের কিছু সহায়তা প্রয়োজন।’

শেখ হাসিনা সৌদি রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে সৌদি আরবের বাদশাহ এবং দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম মহামান্য সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানান।

অ্যাম্বাসেডর এ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন।