সিলেটMonday , 21 November 2022
  1. আইন-আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. উপ সম্পাদকীয়
  4. খেলা
  5. ছবি কথা বলে
  6. জাতীয়
  7. ধর্ম
  8. প্রবাস
  9. বিচিত্র সংবাদ
  10. বিনোদন
  11. বিয়ানী বাজার সংবাদ
  12. বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন
  13. ব্রেকিং নিউজ
  14. মতামত
  15. রাজনীতি

‘সিলেটি শামীমাকে’ পাচার করা হয়েছিলো!

Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রিটিশ নাগরিকত্ব হারানো মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সাবেক বধূ সিলেটি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগমের মামলা পর্যালোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি পাচারের শিকার হয়েছিলেন বলে তার আইনজীবী আদালতকে জানানোর পর সোমবার মামলাটি পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত হয়।

২০১৯ সালে ইসলামিক স্টেটের খেলাফতের পতনের পর সিরিয়া এবং ইরাক থেকে শত শত ইউরোপীয় নিজ নিজ দেশে ফেরার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আইএসে যোগ দেওয়া ইউরোপীয়রা তাদের দেশের সরকারের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগমও সেই শত শত ইউরোপীয়দের একজন যাদের ভাগ্য ঝুলে আছে আদালতে।

২০১৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে পূর্ব লন্ডনের বাসা থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে যান স্কুলশিক্ষার্থী শামীমা বেগম। সেখানে পৌঁছে আইএসের এক যোদ্ধাকে বিয়ে করেন তিনি এবং জন্ম দেন তিন সন্তানের। যদিও তার কোনও সন্তানই এখন বেঁচে নেই। বর্তমানে এই আইএস-বধূর বয়স ২২ বছর।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ার এক শিবিরে গর্ভবতী শামীমাকে খুঁজে পান ব্রিটেনের একজন সাংবাদিক। ওই সাংবাদিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আইএসে যোগ দেওয়া নিয়ে তার কোনও অনুশোচনা না থাকায় ব্রিটেনে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করে সেই সময়।

২০১৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে পূর্ব লন্ডনের বাসা থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে যান স্কুলশিক্ষার্থী শামীমা বেগম। পরে ‘আইএস বধূ’ নামে পরিচিতি পাওয়া শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল করে ব্রিটেনের সরকার। এর ফলে রাষ্ট্রহীন হয়ে সিরিয়ার কুর্দিদের পরিচালিত আল-রোজ বন্দি শিবিরে আটকা পড়েন তিনি।

নাগরিকত্ব বাতিলের মামলার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যুক্তরাজ্যে ফেরার অনুমতি চেয়ে গত বছর ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন শামীমার আইনজীবী। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা শামীমার ওই আবেদন নাকচ করে দেন। সুপ্রিম কোর্টের ওই সিদ্ধান্তের পর সোমবার ব্রিটেনের স্পেশাল ইমিগ্রেশন আপিলস কমিশনে (এসআইএসি) শামীমার মামলার বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

শামীমাকে পাচার করেন কানাডীয় গুপ্তচর :
আইএস বধূ শামীমা বেগমের পরিবারের আইনজীবী তাসনিম আকুঞ্জি ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, শামীমা বেগম পাচারের শিকার কিনা, সেই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এসআইএসিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সাজিদ জাভিদ এই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছিলেন কিনা সেবিষয়ে আদালত পর্যালোচনা করবে।

চলতি বছরের শুরুর দিকে সাংবাদিক রিচার্ড কেরবাজ একটি বই প্রকাশ করেন। এতে তিনি অভিযোগ করে বলেন, শামীমা বেগম ও তার বন্ধুদের সিরিয়ায় নিয়ে গেছেন সিরীয় এক নাগরিক; যিনি কানাডীয় নিরাপত্তা সংস্থার কাছে শামীমার তথ্য ফাঁস করেছিলেন।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগমও সেই শত শত ইউরোপীয়দের একজন যাদের ভাগ্য ঝুলে আছে আদালতে :
মোহাম্মদ আল-রাশেদ নামের এক ব্যক্তি আইএসের পাচারকারী নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতেন। তিনি সেই সময় এই নেটওয়ার্কের তুরস্কের অংশের দায়িত্বে ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আকুঞ্জি বলেছেন, এটা এখন মোটামুটিভাবে জানা যে, কানাডীয় নিরাপত্তা বাহিনীর এক গুপ্তচর শামীমা এবং তার বন্ধুদের সীমান্ত পার করে দিয়েছিলেন।

প্রথম দিকে আইএসের যোগ দেওয়া নিয়ে কোনও ধরনের অনুশোচনা প্রকাশ না করলেও শামীমা বেগম এখন অনুতপ্ত বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। একই সঙ্গে আইএসের শিকার হওয়া নারীদের প্রতি সহানুভূতিও প্রকাশ করেছেন তিনি।

গত বছর এক প্রামাণ্যচিত্রে এই আইএস বধূ বলেছিলেন, সিরিয়ায় পৌঁছানোর পরপরই তিনি বুঝতে পারেন, নিজেদের খেলাফতের সদস্য বাড়ানোর জন্য আইএস এক ধরনের ফাঁদ তৈরি করেছে।

জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে যোগ দেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্য থেকে প্রায় ৯০০ মানুষ সিরিয়া এবং ইরাকে গেছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ১৫০ জনের নাগরিকত্ব বাতিল করেছে ব্রিটেন।

মানবাধিকার সংস্থা রিপ্রাইভ বলেছে, সিরিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলের কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত শরণার্থী শিবিরগুলোতে এখনও ৩৬ শিশুসহ অন্তত ২০-২৫টি ব্রিটিশ পরিবার বসবাস করছে। সেখানে আইএস যোদ্ধাদের সন্দেহভাজন আত্মীয়-স্বজনরা তাদের জিম্মি করে রেখেছেন বলে ধারণা করা হয়।

নিজ নাগরিকদের কীভাবে ফেরানো যায় সেবিষয়ে ইউরোপের অন্যান্য দেশও লড়ছে।
শামীমার বেগমের নাগরিকত্ব বাতিল করেছে ব্রিটেনের সরকার। এর ফলে রাষ্ট্রহীন হয়ে সিরিয়ার আল-রোজ বন্দি শিবিরে আটকা রয়েছেন তিনি
ইউরোপের অন্যান্য দেশও ফেরাচ্ছে নাগরিকদের

জার্মানি, বেলজিয়ামের মতো কিছু দেশ আইএসে যোগ দেওয়া নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের চেষ্টা করেছে। গত মাসে বার্লিন জানিয়েছে, সিরিয়ার জিহাদিদের বন্দি শিবিরে থাকা জার্মান প্রায় সব পরিবারকে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সিরিয়া থেকে ২৬ নারী ও ৭৬ শিশুকে জার্মানিতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে দাবি করেছে বার্লিন।

বেলজিয়ামের ফেডারেল প্রসিকিউটরের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সিরিয়ার শরণার্থী শিবিরে মাত্র অল্প কিছু নারী ও শিশু ছিল। এর আগে আইএসে যোগ দেওয়া নিজ নাগরিকদের ধাপে ধাপে ফিরিয়ে এনেছে ফ্রান্স।

ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের সমালোচনার পর গত কয়েক মাসে নাগরিকদের ফেরানোর কাজে গতি ফিরেছে। জুলাই পর্যন্ত দুই দফায় ৭৫ শিশু ও ৩১ নারীকে সিরিয়া থেকে ফিরিয়েছে প্যারিস। তবে সিরিয়ার শরণার্থী শিবিরগুলোতে এখনও ফরাসি ১৭৫ শিশু ও ৬৯ নারী আটকা রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 999 বার