সিলেটSunday , 27 November 2022
  1. আইন-আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. উপ সম্পাদকীয়
  4. খেলা
  5. ছবি কথা বলে
  6. জাতীয়
  7. ধর্ম
  8. প্রবাস
  9. বিচিত্র সংবাদ
  10. বিনোদন
  11. বিয়ানী বাজার সংবাদ
  12. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
  13. ব্রেকিং নিউজ
  14. মতামত
  15. রাজনীতি

সিলেটে জাল ভিসার বিশাল নেটওয়ার্ক, সেই মাছুমকে রিমান্ডে চায় সিআইডি

Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার:
মাছুম আহমেদ (৩৪)। সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার মো. আতাউর রহমানের ছেলে। কম বয়সেই জড়িয়ে পড়েন ভয়ঙ্কর এক চক্রের সঙ্গে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভিসা জাল করাই সেই অপরাধ চক্রের কাজ। গত ২২ নভেম্বর তাকে সিলেট মহানগর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শুধু এবারই নয়, এর আগেও এমন অপরাধের দায়ে গ্রেফতার হন মাছুম। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে তার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। তবে জেলের শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন মাছুমকে ফেরাতে পারেনি অন্ধকার জগত থেকে। জামিনে বেরিয়েই তিনি ফের শুরু করেন জাল ভিসার কারবার।

মাছুমের বিরুদ্ধে সিলেট ও ঢাকার বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। গ্রেফতারের পর তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেন জানিয়েছে সিআইডি। সেই আবেদনের শুনানি এখনও হয়নি।

গত শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান গণমাধ্যমকে জানান- গ্রেফতারকৃত সিলেটের মাছুম কানাডাসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ভুয়া ও জাল ভিসা প্রস্তুতকারী এবং মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য। নিরীহ মানুষদের উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে বিদেশে পাচার করতেন তিনি। তার বিরুদ্ধে মানবপাচার সংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে। সম্প্রতি মাছুমের বিরুদ্ধে ঢাকার বিমানবন্দর থানায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়ার নির্দেশনায় মানবপাচার অপরাধ দমন ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক মো. আছলাম আলীর নেতৃত্বে তাকে ২২ নভেম্বর সিলেট মহানগরের মজুমদার পাড়ার টিএনটি কলোনি থেকে গ্রেফতার করা হয়। ভয়ঙ্কর এই চক্রের সব সদস্যকেই গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে সিআইডি।

জানা গেছে, সিলেটের কানাইঘাটের এই মাছুম বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই এ ক্রাইমে জড়িয়েছেন। ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর একই অভিযোগে তার নিজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-১৪ এর একটি টিম। ওই সময় মাছুমের কাছ থেকে জাল পাসপোর্টের ফটোকপি এবং তুরস্কের ভুয়া ভিসার জন্য ব্যবহৃত ‘অ্যাম্বুস সিল’ তৈরির মেশিনসহ অন্যান্য কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব ওই সময় মাছুম সম্পর্কে জানায়- ফিলিস্তিন দূতাবাস অভিযোগ জানানোর পর মাসুমের বিরুদ্ধে নকল পাসপোর্ট তৈরি করে জার্মানি, নিউ জিল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, রোমানিয়া, ইতালি, ইসরায়েল, গ্রিস, মালয়েশিয়া, কানাডা, তুরস্ক, ক্যামেরুন প্রভৃতি দেশে মানবপাচারের তথ্য জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা ও র‍্যাবের নজরে আসে। এর প্রেক্ষিতে র‍্যাব ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার নিবিড় পর্যবেক্ষণে তার বিরুদ্ধে নকল পাসপোর্ট তৈরি করে বিভিন্ন দেশে মানবপাচারের প্রমাণ পাওয়া যায়।

আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র জানায়, মাছুমসহ বাংলাদেশের এক শ্রেণির অসাধু দালাল চক্র স্বল্প আয়ের মানুষদের প্রলোভন দেখিয়ে আন্তর্জাতিক চক্রের যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে অবৈধভাবে মানবপাচার করে আসছে। মাছুম ও তার চক্রের সদস্যরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পাসপোর্ট তৈরি করে দুই-তিন হাজার ইউরো-তে বিক্রি করতো।

এছাড়া এই চক্র বিভিন্ন দেশের ভিসার নকল স্টিকার বানিয়ে ভুয়া ভিসা দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে মানবপাচার করে আসছে। সিলেটে তাদের রয়েছে বিশাল নেটওয়ার্ক।

মাছুম ও তার চক্রের বিষয়ে রোববার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে সিআইডি’র মানবপাচার অপরাধ দমন ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) নজরুল ইসলাম বলেন- সিলেটসহ সারা দেশেই এদের নেটওয়ার্ক। মাছুমসহ এ চক্রের কয়েকজনকে ইতোমধ্যে আমরা গ্রেফতার করেছি। মাছুমকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে আদালতে। সেই আবেদনের শুনানি এখনও হয়নি।

তিনি আরও বলেন- মাছুমের বিরুদ্ধে ঢাকার বিমানবন্দর ও সিলেট মহানগরের শাহপরাণ থানায় মামলা রয়েছে। এ চক্রের সবাইকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। শীঘ্রই চক্রটির শিকড় উপড়ে ফেলা হবে।