সিলেটTuesday , 21 March 2023
  1. আইন-আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. উপ সম্পাদকীয়
  4. খেলা
  5. ছবি কথা বলে
  6. জাতীয়
  7. ধর্ম
  8. প্রবাস
  9. বিচিত্র সংবাদ
  10. বিনোদন
  11. বিয়ানী বাজার সংবাদ
  12. ব্রেকিং নিউজ
  13. মতামত
  14. মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু
  15. রাজনীতি

জাতীয় পরিচয় পত্র (NID) সংশোধনের জন্য গনশুনানির নামে গন-প্রতারনা কি কাম্য?

admin
March 21, 2023 2:37 pm
Link Copied!

এডভোকেট মোঃ আমান উদ্দিন:
সংবিধানের প্রদাত্ত ক্ষমতা বলে রাষ্ট্রের মালিক কিন্তু সাধারন জনগন। গৃহকর্মী মালিকের সাথে বসসুলভ আচরন করবেন এটাই ভদ্রতা। যখন মালিক অসন্তুষ্ট হবেন গৃহকর্মীর চাকুরী ও বেতন ভাতা সবই বন্ধ হয়ে যাবে। কেননা সে তার কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে তার সেবার জন্য তার পক্ষে রাষ্ট্র যথাযথ নিয়মে নিয়োগ দিয়ে থাকে। তাও আবার নির্দিষ্ট মেয়াদে। মাত্র ৬০ বছর পূর্ন হয়ে গেলেই তার নিজস্ব হিসাব নাম্বারে প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান বন্ধ হয়ে যায়। প্রজাতন্ত্রের যেহেতু বেতন ভোগী কর্মচারী, সেহেতু সাধারন জনগন প্রয়োজনে তার সেবকের নিকট সেবা চাইতেই পারে। সেটা তার অধিকার।

সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়ছল কাদির এর ২টি ঘটনায় সচেতন নাগরিক হিসাবে মর্মাহত হলাম। সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। সিলেট বিভাগের বিভাগীয় নির্বাচন কর্মকর্তা সাধারন জনগনকে নিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য গনশুনানী এবং তাৎক্ষনিক সমস্যা সমাধান করবেন। সাধারন জনগন এ উদ্দোগকে সাধুবাদ জানানোর কথা। কারন তিনি একাচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী। বুকভরা আশা নিয়ে তাদের নিয়োজিত কিছু কর্মচারীর মাধ্যমে হাজির করে গন-শুনানী করলেন। সুশীল-সমাজ, জনপ্রতিনিধি বা সংবাদকর্মী সে-খবর স্বাভাবিক ভাবে পাওয়ারই কথা কিন্তু কেহই খবর পেলেন না? জনগনকে বলতে শুনা গেল, রাষ্ট্রের জনগনের কষ্টার্জিত টাকা খরছ করে গন-শুনানীর নামে গন প্রতারনা করে গেলেন। নিন্দার ঝড় উঠল। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা যে সব সমস্যা সমাধান করতে পারেন, সে সমস্যা বিভাগীয় নির্বাচন কর্মকর্তা তাৎক্ষনিক সমাধান করলেন। কিন্তু তাদের দেওয়া প্রদাত্ত ক্ষমতা অনুযায়ী (১) অ,আ,ক,খ, একার, আকার এর সংশোধনের ক্ষমতা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার।(২) একটু বড় সমস্যা যেমন ৪/৫ বয়স, পিতা-মাতার নাম, বা ছোট খাট সমস্যা হলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। (৩) ১০বৎসর বা জটিল সব সমস্যা হলে, একচ্ছত্র ক্ষমতা আঞ্চলিক নির্বাচিন কর্মকর্তার। অবশ্য উপজেলা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জানামতে কোন অভিযোগ নেই। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার সাথে লোক মুখে চাউর আছে, তাহার নিয়জিত এজেন্টের মাধ্যমে বিশাল অংকের টাকা যথাযথ লেনদেন হলে, তাৎক্ষনিক সমস্যা সমাধান হয়ে যায়।

জাতীয় পরিচয় পত্রে ভুল হয়েছে অনেক ক্ষেত্রে জনগনের সচেতনতার অভাবে। জাতীয় পরিচয় পত্র নতুন ভাবে বাংলাদেশে চালু হয়েছে। সে কারনে প্রকল্পের আওতায় কতিপয় কর্মকর্তা ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় হউক তথ্য সংগ্রহ কালে ভুল করলেন। কিন্তু এসব ভুল তথ্য সংগ্রহকারী কাউকে তো পাওয়া যাবে না। সুতরাং জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করণের জন্য নিজ থেকে যথাযথ প্রমান সাপেক্ষে সংশোধনের জন্য আবেদন করেন এবং সকল দায়িত্ব হলফনামার মাধ্যমে নিজে গ্রহন করেন। জাতীয় আর্ন্তজাতিক ক্ষেত্রে সকল হলফনামা নোটারী পাবলিক এর মাধ্যমে হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ম্যাসেজ আপশন থেকে বলা হয়, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক হতে হবে। জনগনকে এ হলফনামা সম্পাদন করতে হলে, কত যে খ্যায়াতির বিড়ম্বনা সহ্যকরতে হয়।এত সব দেওয়ার পরও অনেক ক্ষেত্রে ম্যাসেজ এর মাধ্যমে জানিয়ে দেন আবেদনটি বাতিল। আবার তার নিয়োজিত দালাল এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট টাকা দিয়ে যোগাযোগ করলে ১০৫ নং থেকে ম্যাসেজ চলে আসবে আবেদনটি অনুমোদিত হয়েছে। এ সব আপকর্ম উর্ধতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে ভূরি ভূরি নজির পাবেন।

আঞ্চলিক কর্মকর্তা কার্যালয়ে প্রায় ঘন্টা খানেক অপেক্ষারত ছিলাম। নির্দিষ্ট নোটিশ বোর্ডে মোবাইল নাম্বার ২টি এবং আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা অনুরোধ করেছেন “প্লিজ” আমাকে স্যার বলবেন না। অঞ্চলিক কর্মকর্তার অফিস কক্ষের বাহিরে বড় তালা ঝোলানো। নাম্বারদ্বয়ে যে কোন সমস্যার জন্য যোগাযোগ করুন। কিন্তু নাম্বারদ্বয়ে অবস্থা বড়ই করুন। আগত স্বাক্ষাত প্রার্থীদের কাছ থেকে জানা গেল জিবদ্দশায় এ নাম্বারদ্বয়ে ফোন করলে পাবেন না। আমি নিজেই চেষ্টা করলাম। কিন্তু দর্শনার্থীদের কথাই সঠিক। নোটিশ বোর্ডে লিখা কোন দালালের সাথে যোগাযোগ করবেন না। খুশিতে আত্মহারা। ভাবলাম হয়ত! ভাল মানুষ এখন ও আছেন। ফোন নাম্বার দ্বয়ে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হই এবং আগত প্রায় শতাদিক দর্শনার্থী যারা দূরদূরান্ত থেকে আসেন তাদের সমস্যা সমাসধানে সহযোগীতা পাবেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার।

আগত সহজ সরল জনগনকে জানিয়ে দেওয়া হল অফিসের জনৈক ব্যক্তির মাধ্যমে। স্যার মহাব্যস্ত। আজকে পাবেন না আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জনাব ফয়ছল কাদিরকে। নিরবে সবাই চলে গেল। আমি কিন্তু নাছুড়বান্দা। কারন জীবনে ঐ অফিস ১ম এসেছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা উনার ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারটি দিলেন। ফোন করলাম। ধরলেন। আপনি কোথায়। বললেন অফিসে। অফিসের বাহিরে তো বড় তালা ঝোলানো। অফিসের জনৈক এক কর্মচারীর মাধ্যমে পাশের রোমের ভিতরে দরজা দিয়ে দেখা করার সুযোগ দিলেন।

পরিশেষে বলতে চাই, জাতীয় পরিচয় পত্রের গায়ে লিখা, এটা কিন্তু রাষ্ট্রীয় সম্পদ। এই রাষ্টীয় সম্পদ দিয়ে পাসপোর্ট করতেই হবে। তাও আবার বাধ্যতামূলক। পাসপোর্ট হোল্ডার এর পূর্বের পাসপোর্ট টি নবায়ন বা নতুন করে পাসপোর্ট ইন্স্য অত্যন্ত জরুরী।এই পাসপোর্ট নিয়ে বিশ্বে যাবে এবং তাদের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে রাষ্ট্রের জনগন সুখে শান্তিতে বসবাস করবেন। খ্যাতিপাবে রেমিট্যান্স যোদ্ধা। কিন্তু যোদ্ধা জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের যুদ্ধ করতে গিয়ে আগেই নিঃশেষ হয়ে যায়। হয়রানির শিকার হয়ে অনেক ষ্টোক করে বা হার্টি এটাক করে নিহত হওয়ার অনেক অভিযোগ আছে। সদ্য সাবেক দুদুক কর্মকর্তার ভাই পাসপোর্ট করতে গেলে জাতীয় পরিচিয়পত্র প্রদর্শন বাধ্যতা মূলক। এদিকে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ F-4 ক্যাটাগরিতে চিটি দিয়েছে পাসপোর্ট ও অন্যান্য কাগজ পত্র জমা দেওয়ার জন্য। অনেক গোরা-গোরি করে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে ব্যর্থ হয়ে পরপারে ষ্টোক করে চলে গেলেন। ঐ ব্যক্তির জানাযার নামাজে উপস্থিত ছিলাম। মৃত ব্যক্তির নিকটাত্মীয় আমাকে তাহার মৃত্যুর কারন জানালেন। হায়! এই অসহায় জনগের আকুতি কে শুনিবে?
-লেখকঃ সভাপতি, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বিয়ানীবাজার, সিলেট।