ফুজেল আহমদ:
কানাডার টরেন্টোতে ইউনাইটেড জালালাবাদ ফাউন্ডেশন জিটিএ ইনক এর ইফতার এবং দোয়া মাহফিল গত ৩১ শে মার্চ রবিবার স্কার্বোরর আল আবেদীন জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
কানাডার সর্ববৃহৎ সামাজিক সংগঠন ইউনাইটেড জালালাবাদ ফাউন্ডেশন জিটিএ ইনক এদিন পবিত্র মাহে রমজানের তাৎপর্য বিষয়ক এক আলোচনার আয়োজন । ইফতার মাহফিল আয়োজনের ক্ষেত্রে ইফতারের আগেই আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এর মধ্যে ইসলামিক তামাদ্দুন চর্চার অংশ হিসাবে আয়োজন করা হয় কেরাত এবং কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতা। বাচ্চাদের নিয়ে এই আয়োজন পরিচালনা করেন কোহিনুর তানভীর-শাহিন হোসাইন-তুহিন মিয়া এবং মুস্তাফিজুর রহমান জুয়েল।
কোরআনিক এই প্রতিযোগীতায় বিচারক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন হাফিজ সাব্বির খান, হাফিজ মোহাম্মদ আব্দুল ওয়য়াদুদ,মাওলানা খলিলুর রহমান। প্রতিযোগীতায় অংশ নেওয়া প্রত্যেকটি শিশু-কিশোরকেই বিজয়ী ঘোষণা দেন উপস্থাপক তানভীর কোহিনুর।
টরেন্টোতে বসবাসরত সকল জালালাবাদি তথা সিলেটিদের সর্ববৃহৎ প্ল্যাটফর্ম ইউনাইটেড জালালাবাদ এর ইফতার মাহফিলেও ছিলো পুরো সিলেট বিভাগের প্রতিচ্ছবি এবং সিলেটি আতিথেয়তার ছোঁয়া।
দুই-তিন যুগ থেকে বসবাসরত প্রবীণ সিলেটি মুরব্বিদের এক নস্টালজিক মিলনমেলায় রূপ নিয়ে ছিলো আল আবেদীন জামে মসজিদ। প্রবীণ এবং নবীদের সাথে নবাগতদের হাস্যজ্জ্বল কোলাকোলি দেখে মনে হয়েছে ঈদের আগেই টরন্টোতে নেমে আসলো ঈদের আমেজ।
সিলেটি কমিউনিটির যারা অতীত থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের বড় একটি অংশই আসলে টরেন্টোতে বসবাসরত বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃত্বদেন। সেই সূত্রে সিলেটের বাহিরের অন্যান্য সামাজিক রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সংগঠনের বাংলা ভাষাভাষী কমিউনিটির নেতৃত্ববৃন্দরা উপস্থিত হয়ে ইউনাইটেড জালালাবাদ ফাউন্ডেশন জিটিএ ইনক এর ইফতার মাহফিলকে খুবই চমৎকার একটি ভ্রাতৃত্ববোধ এবং সহাবস্থানের নজির স্থাপন করেছেন।
ইউনাইটেড জলালাবাদ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক শিক্ষাবিদ আখলাক হোসেন এবং সদস্য সচিব মাহবুবুল ইসলাম তাদের শুভেচ্ছা বক্তব্যে এই ইতিবাচক বিষয়গুলো উল্লেখ করেন। একই সাথে সংগঠনের পক্ষ থেকে উপস্থিতি এবং শুভাকাঙ্ক্ষী সহ সবাইকে মোবারকবাদ জানান।
বিশেষ করে প্রায় ১৫০০ প্লাস মানুষের ইফতারের এই মহা আয়োজন সামাল দিতে সংগঠক খসরুজ্জাম চৌধুরী দিলুর নেতৃত্বে আব্দুল মানিক,তানভির কোহিনুর ,মোস্তাফিজুর রহমান জুয়েল, আব্দুল বাতিন, সুমন আহমদ, তাজুল মিয়া, শাহিন হোসেন, আরমান আহমদ ,আমজাদ আহমদ, মাহফুজুল হক রাজু, দেলোয়ার হোসেন, জনি ,ফুয়াদ বক্সি মামুন,সাদ উদ্দিন জাহিদুর রহমান, আলিম উদ্দিনসহ যারা খুবই সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পুরো ইফতারি প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেছেন তাদেরকে সংগঠনের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানান ইফতার কমিটির অন্যতম সদস্য আব্দুল মানিক।
বিশেষ করে কানাডাতে আগত নবাগত প্রবাসীরা যেভাবে ভলান্টিয়ারের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ইফতারের প্যাকেট তৈরিতে যেভাবে মেধা এবং শ্রম দিয়েছেন সেজন্য সিলেটি কমিউনিটির ভ্রাতৃত্ববোধ এবং ভালোবাসার এক নজির দেখলো টরেন্টবাসী।
রমজানের তাৎপর্য বিষয়ক আলোচনার বক্তারা হলেন মাওলানা ইউসুফ, মাওলানা আসলাম উদ্দিন আজহারী এবং মাওলানা খলিলুর রহমান। ইফতারের পূর্বে দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা সিরাজুল ইসলাম।
ইফতার মাহফিল আয়োজনসহ সামাজিক-,মানসিক ,আর্থিক সর্বোপরি কায়িক পরিশ্রম দিয়ে যারা এত বিশাল সংখ্যক রোজাদারকে উপস্থিত থেকে আপ্যায়িত করেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন সংগঠনের পরিচালক সামসুল ইসলাম ,কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব মুহিবুর রহমান খান , জয়নুল ইসলাম ,শরফুল ইসলাম , শাকিল খান ,কামরুল হাসান সাহান ,বাপ্পী রাহমান , বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের সভাপতি জাকির খান, বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি খুশনুর রশিদ চৌধুরী, বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের অর্থ সম্পাদক সাঈদ চৌধুরী দিপু; বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সবুজ চৌধুরী টিটু,
মৌলভীবাজার এসোসিয়েশনের সভাপতি লায়েকুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মুর্শেদ আহমদ মুক্তা, সুনামগঞ্জ এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রফেসার আতাউর রহমান, বিয়ানিবাজার এসোসিয়েশনের সভাপতি ও জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টোর সাবেক নির্বাহি সহ সভাপতি আব্দুল মুমিত, সাধারণ সম্পাদক এজাজ চৌধুরী, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টোর সাবেক নির্বাহি সহসভাপতি সাইদুন ফয়ছল, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টোর সাবেক সহসভাপতি শাহাব উদ্দিন, জালালাবাদ এসোসিয়েশন সাবেক সহসভাপতি এবং গোলাপগঞ্জ ফাউন্ডেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাব্বির চৌধুরী (লিটন),
জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টোর সাবেক সহসভাপতি জামাল উদ্দিন, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টোর সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কোহিনুর তানভীর; জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টোর সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আমরুল ইসলাম,জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টোর সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আরাফাত বকসি সুমন, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টোর সাবেক নির্বাহি সদস্য নজরুল আহমদ ।
বিয়ানিবাজার সমিতির সাবেক সভাপতি টুনু মিয়া, বিয়ানিবাজার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ রহমান, গোলাপগঞ্জ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আনই মিয়া, এমপিপি ডলি বেগম এবং ইউনাইটেড জালালাবাদ ফাউন্ডেশনের সকল আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা।
সংগঠক সাইদুন ফয়সাল জানান সিটিতে প্রতিটি মসজিদেই প্রতিদিন ইফতারের আয়োজন হচ্ছে, একই তারিখে একাধিক সংগঠনের ইফতার মাহফিলও হচ্ছে। তবে আল আবেদিন মসজিদে কমিউনিটির নেতৃত্ববৃন্দরা যেভাবে উপস্থিত হয়েছেন মনে হয়েছে সিলেট শহরের কোন জায়গায় উপস্থিত হয়েছি। ইউনাইটেড জালালাবাদই হলো ইউনাইটেড সিলেটের প্রতিচ্ছবি।
তারুণ্যের প্রতিনিধি এবং দুইযুগের বেশী সময় থেকে টরেন্টোতে বসবাসরত অলিউর রহমান এবং আরাফাত বকসি সুমন একই সুরে নবাগতদের অংশ গ্রহন এবং স্বেচ্ছাসাবক হিসাবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে মুন্সিয়ানার প্রশংসা করে বলেন, আগামীর কানাডার বাংলা কমিউনিটির নেতৃত্ব দেবেন এসব নবাগতরা।
সংগঠনের আহবায়ক আখলাক হোসেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন,ইউনাইটেড জালালাবাদ হলো একটি বিশাল পরিবার যেখানে এসে এক মোহনায় মিলিত হয়ে যায় ছোট বড় সব সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠন গুলো। এটাই হলো ইউনাইটেড জালালাবাদ জিটিএ ইনক এর সার্থকতা।