সিলেটWednesday , 24 August 2022
  1. আইন-আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. উপ সম্পাদকীয়
  4. খেলা
  5. ছবি কথা বলে
  6. জাতীয়
  7. ধর্ম
  8. প্রবাস
  9. বিচিত্র সংবাদ
  10. বিনোদন
  11. বিয়ানী বাজার সংবাদ
  12. ব্রেকিং নিউজ
  13. মতামত
  14. মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু
  15. রাজনীতি

একদিন পরই এনামুল বাছিরের জামিন আদেশ প্রত্যাহার করলেন হাইকোর্ট

Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার:
আপিলের নথিতে জামিনের দরখাস্ত না থাকায় ঘুষ গ্রহণের মামলায় আট বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বরখাস্ত হওয়া পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের জামিন আদেশ একদিন পর প্রত্যাহার করে নিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তার মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৪ আগস্ট) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। গতকাল মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) একই বেঞ্চ এনামুল বাছিরকে জামিন দিয়েছিলেন।

আদালতে এনামুল বাছিরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ফারুক আলমগীর চৌধুরী। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আশেক মোমেন।

জামিন আদেশ প্রত্যাহারের পর দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, গতকাল দুইপক্ষকে শুনে আদালত জামিন দিয়েছিলেন। আজ অর্ডারটি রিকল করে মামলাটি আউট অব লিস্ট করে দিয়েছেন। একটা পানিশমেন্ট হিসেবে। কারণ খন্দকার এনামুল বাছিরের আইনজীবী জামিনের দরখাস্ত নথিতে না দিয়েই এটি শুনানি করেছেন। বিচারপতি ওনাকে বিশ্বাস করই, ওনার কথা শুনে জামিন দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে দেখা যাচ্ছে যে, জামিনের দরখাস্ত নথিতে নেই।

বিচারপতি স্পষ্ট করে বলেছেন, আপনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, আপনাদের বিশ্বাস করি। আপনাদের কথার ওপর আমরা আদেশ দিই। কিন্তু আপনি জামিন দরখাস্ত না দিয়ে শুনানিতে অংশ নিলেন, এটা ভুল হতে পারে। কিন্তু আমাকে বলা উচিত ছিল। কিন্তু তা আপনি করেননি। এটা প্রথম ভুল। তারপর দ্বিতীয় ভুল হলো, আমার অনুমতি না নিয়ে আমার বেঞ্চ অফিসারকে জামিনের দরখাস্তটি দিলেন। আমার বেঞ্চ অফিসারের ভুল হচ্ছে, তিনি আমার অনুমতি না নিয়ে দরখাস্ত নিয়েছেন। এখানে যেকোনো দরখাস্ত দিতে গেলে আমার পারমিশন লাগবে। এখন দেখছি দুইজনেই সমান অপরাধী। আমি আপনাকে বার কাউন্সিলে পাঠাতাম। কিন্তু আপনাকে আমি চিনি, আপনার বিরুদ্ধে অতীতে খারাপ রেকর্ড নেই। তাই শাস্তি হিসেবে কেবল জামিন প্রত্যাহার করে নিলাম।

২০১৯ সালের ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতি থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদক পরিচালক এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমান। ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে ওই টিভি চ্যানেলকে দিয়েছিলেন ডিআইজি মিজান নিজেই। এ বিষয়ে পরে অন্য গণমাধ্যমেও সাক্ষাৎকার দেন তিনি। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে বাঁচতে বাছিরকে ওই অর্থ ঘুষ দেন বলে ডিআইজি মিজান দাবি করেন।

এ প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পর দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতকে প্রধান করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ২০১৯ সালের ১০ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালক বাছিরকে দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করে কমিশন।

এরপর ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ মানিলন্ডারিং আইনে দুদকের ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে বাছির ও মিজানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। একই বছর ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি এই মামলায় বাছির ও মিজানের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।

এর এক বছর পর ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। একই বিচারক ওই বছরের ২১ মার্চ এ মামলায় বিচার শুরুর আদেশ দেন। ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।

এ বছরের (২০২২) ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ মামলার রায় দেন।

রায়ে দুদকের এনামুল বাছিরকে আট বছর এবং ডিআইজি মিজানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া বাছিরকে ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

অপরদিকে মানিলন্ডারিং আইনের ৪ ধারায় বাছিরকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। বাছিরের দুটি দণ্ড একসঙ্গে চলবে বলে জানান আদালত। ফলে তাকে মোট পাঁচ বছর দণ্ড ভোগ করতে হবে।

নিম্ন আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে এ বছরের ৬ এপ্রিল হাইকোর্টে আপিল করেন এনামুল বাছির। এক সপ্তাহ পর ১৩ এপ্রিল আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। সেদিন তার ৮০ লাখ টাকা জরিমানা স্থগিত করেন উচ্চ আদালত।

২৯ এপ্রিল জামিন চেয়ে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এ আবেদন করেন এনামুল বাছির। কিন্তু সেটি খারিজ হয়। এরপর গত ১৬ জুন তিনি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। ২৪ জুন সেটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করা হয়।

খন্দকার এনামুল বাছির ১৯৯১ সালে অ্যান্টি করাপশন অফিসার (এসিও) হিসেবে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে যোগ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশন গঠিত হওয়ার পর তিনি সহকারী পরিচালক, উপ-পরিচালক ও পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান।