সিলেটThursday , 29 September 2022
  1. আইন-আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. উপ সম্পাদকীয়
  4. খেলা
  5. ছবি কথা বলে
  6. জাতীয়
  7. ধর্ম
  8. প্রবাস
  9. বিচিত্র সংবাদ
  10. বিনোদন
  11. বিয়ানী বাজার সংবাদ
  12. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
  13. ব্রেকিং নিউজ
  14. মতামত
  15. রাজনীতি

যানবাহন অধিদপ্তরের গাড়ি ক্রয়

Link Copied!

সম্পাদকীয় :
বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায়ে কৃচ্ছ্রসাধন জরুরি হয়ে পড়েছে। বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতি যেন দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব না ফেলে, সেজন্য সব ধরনের ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি গ্রহণ করেছে সরকার। সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধন এবং যানবাহন ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে যানবাহন অধিদপ্তরের ১৩০টি জিপ গাড়ি কেনার প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়টি নানা ধরনের প্রশ্নের জন্ম দেবে।

এসব গাড়ির মধ্যে বিভাগীয় ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারদের জন্য নতুন ৩০টি এবং বাকি ১০০টি হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য; যদিও এসব কর্মকর্তার ব্যবহৃত অনেক গাড়ির আয়ুষ্কাল এখনো শেষ হয়নি।

জানা যায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে গাড়ি কেনাকাটার জন্য সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের বাজেট থেকে প্রায় ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ের অনুমোদন চেয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আরও জানা যায়, চার অর্থবছর ধরে নতুন কোনো গাড়ি কেনা হয়নি। আগে কেনা অনেক গাড়ির আয়ুষ্কাল প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ফলে অনেক বিকল্প ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যানবাহন সেবা নিতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।

সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে গাড়ি কেনার জন্য যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে ক্রয় করা গাড়ির ব্যবহারের বয়স হয়েছে ১০ থেকে ১৫ বছর। সংশ্লিষ্ট বিধি মোতাবেক গাড়িগুলোর আয়ুষ্কাল অতিক্রান্ত হয়েছে।

এসব গাড়ি ব্যবহারের অনুপযোগী। এ অনুপযোগী গাড়িগুলোর মধ্যে প্রতিস্থাপক হিসাবে গত তিন অর্থবছরে মোট ১২৫টি গাড়ি কেনা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কেনা হয়েছিল ৯টি জিপ গাড়ি, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৬৬টি এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে কেনা হয় ৫০টি গাড়ি। এখন ৩৫৯টি আধুনিক গাড়ি কেনা প্রয়োজন বলে ওই প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের দাবি, বিভাগীয় ও অতিরিক্ত কমিশনারদের ব্যবহারের জন্য উন্নত প্রযুক্তি ও আধুনিক মানের যানবাহন নেই। ফলে পরিবহণ সেবার ক্ষেত্রে তাদের বিভিন্ন জটিলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এছাড়া বিভাগীয় কমিশনারদের যে ৩৭টি গাড়ি দেওয়া হয়েছে, তা অন্যান্য অফিসের সমতুল্য নয়।

এসব গাড়ির মধ্যে কিছুসংখ্যক সম্প্রতি ক্রয় করা হয়েছে; কিছুসংখ্যক ক্রয় করা হয়েছে অনেক আগে। সরকারি হিসাবে বেশকটি গাড়ির আয়ুষ্কাল শেষ হয়েছে। ২৮টি গাড়ি ২ থেকে ৭ বছর ব্যবহার হয়েছে; যদিও প্রস্তাবে এ গাড়িগুলোকে জরাজীর্ণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের দাবি, জনপ্রশাসনের কাজের গতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) বাজেটে বরাদ্দ রাখা অর্থ দিয়ে ৩০টি জিপ গাড়ি কেনা প্রয়োজন। এতে ব্যয় হবে বিপুল অঙ্কের অর্থ। আমরা মনে করি, মাঠপর্যায়ে এমন গতি আনা দরকার যাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরাসরি উপস্থিত না থাকলেও কাজে কাঙ্ক্ষিত গতি বজায় থাকে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন, এটাই প্রত্যাশা।

সরকার সব ধরনের ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি গ্রহণ করলেও একের পর এক প্রকল্পে অপচয়ের খবর মিলছে, যা দুর্ভাগ্যজনক। দেশে সব ধরনের উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে ব্যয় সংকোচন নীতি অনুসরণ করা উচিত বলে মনে করি আমরা। দেশের তথা সারা বিশ্বের এ ক্রান্তিকালে সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকার ব্যয় সংকোচনের নীতি অব্যাহত রাখবে, এটাই কাম্য।