স্টাফ রিপোর্টার:
পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা। সম্প্রতি শেষ হওয়া সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীদের পক্ষ থেকে টাকা ফেরতের চাপ দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অনেক সদস্য টাকা ফেরত দিয়েছেন। পরাজিত প্রার্থীদের পক্ষ থেকে এমন চাপ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। টাকা ফেরত না দিলে নানা ধরনের হুমকি-ধমকিও দেয়া হচ্ছে ইউপি সদস্যদের। এ নিয়ে সিলেট জোড়ে নানা গুঞ্জন উঠেছে। সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন সভাপতি এডভোকেট মো: আমান উদ্দিন সিলেট কন্ঠকে বলেন, জেলা পরিষদ পুরোটাই একটা অকার্যকর ব্যবস্থা। সরকার স্থানীয় নেতাদের ব্যক্তি উন্নয়নের জন্য এই পরিষদটি সৃষ্টি করেছে। দুর্নীতি করে এখান থেকে শত শত কোটি টাকা লোপাট হবে। সঙ্গত কারণেই এই নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীরা কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ভোট কিনেছেন।
সিলেটে প্রায় প্রত্যেক উপজেলার পরাজিত সদস্যরা কমবেশি টাকা ফেরতের জন্য ভোটারদের চাপ দিচ্ছেন। সিলেট সদর ও উপজেলা পরর্যায়ে একজন রাজনীতিক দলীয় নেতা ও জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে প্রার্থীর প্যাকেজে ভোটারদেরকে ২ ও ৩ পর্যায়ে টাকা দেয়া হয়েছে। কিছু সদস্য ভয়ে টাকা ফেরত দিয়েছেন। অনেক সদস্য টাকা ফেরত দিতে না পেরে মোবাইল ফোন বন্ধ করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
সিলেট সদর ও বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, জৈন্তপুর, গোয়াইনঘাট, বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, ওসমানীনগর, উপজেলার অনেক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সিলেট কন্ঠকে বলেন, ভোটারা সব প্রার্থীর থেকেই টাকা নিয়েছেন। কিছু প্রার্থী যা ভোট পেয়েছেন তার দ্বিগুণ প্রার্থীকে টাকা দিয়েছেন। ভোট গণনা শেষে দেখা যায় যতগুলো ভোটারকে ভোট প্রদানের জন্য অর্থ দেয়া হয়েছে তার অর্ধেক ভোট পেয়েছেন। তখন সঙ্গত কারণেই প্রার্থীর টনক নড়ে। তবে এখানে কয়েক প্রার্থী এর বিষয়ে কথা উঠেছে তিনি কিন্তু কারও থেকে টাকা ফেরত চাননি। তবে তাদের নির্বাচনী এজেন্ট যারা ছিলেন এবং যাদের মাধ্যমে টাকা বিরতণ করা হয়েছে তারা হয়তো ভোটারদের এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন। সেটা করতেই পারেন। রাজনীতিক এক ব্যক্তি আরও বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা লোভী প্রকৃতির। তারা উভয় প্রার্থীর থেকে ভোট দেয়ার নাম করে টাকা নিয়েছেন। এই কাজটা তারা মোটেও ঠিক করেননি। তাদের উচিত যাকে ভোট দেননি তার টাকা সম্মানের সঙ্গে ফিরিয়ে দেয়া। তিনি আরও বলেন, ভোটে যারা টাকা দিয়েছেন এবং যারা নিয়েছেন উভয়ই অপরাধী।
সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন সভাপতি এডভোকেট মো: আমান উদ্দিন সিলেট কন্ঠকে বলেন, জেলা পরিষদের নির্বাচন সচেতন মহলের নির্বাচন। এই নির্বাচনেও যদি অবৈধ অর্থের লেনদেন হয় তাহলে নির্বাচন ব্যবস্থা বলতে দেশে আর কিছু থাকতে পারে না। তিনি উভয়পক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান।