সিলেটWednesday , 14 September 2022
  1. আইন-আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. উপ সম্পাদকীয়
  4. খেলা
  5. ছবি কথা বলে
  6. জাতীয়
  7. ধর্ম
  8. প্রবাস
  9. বিচিত্র সংবাদ
  10. বিনোদন
  11. বিয়ানী বাজার সংবাদ
  12. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
  13. ব্রেকিং নিউজ
  14. মতামত
  15. রাজনীতি

একেবারে ‘শূন্য হাতে এসেছি’ বলতে পারবেন না

admin
September 14, 2022 8:43 pm
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারত সফরে আমরা কী পেলাম, এ প্রশ্ন খুবই আপেক্ষিক। এটা আপনার নিজের ওপর নির্ভর করছে, আপনি কীভাবে দেখছেন। বাংলাদেশের যে ভৌগোলিক অবস্থান, আপনারা লক্ষ্য করবেন, চারদিকে কিন্তু ভারত। এক পাশে একটুখানি মিয়ানমার, তারপর বঙ্গোপসাগর। বন্ধুপ্রতিম দেশ থেকে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৃষি, আমাদের যোগাযোগ— সব বিষয়ে যে সহযোগিতা, সেটা কিন্তু আমরা পাই।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভারত সফর নিয়ে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

গত ৫ সেপ্টেম্বর চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও একান্ত বৈঠক করেন তিনি। এতে নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, মাদক চোরাচালান ও মানবপাচার রোধ সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর সফরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। স্মারক সই শেষে দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথ বিবৃতি দেন। সফর শেষ করে প্রধানমন্ত্রী গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে দেশে ফেরেন।

সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি তেল আমদানি করতে এবং জ্বালানি তেলের আমদানি উৎস বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে গত ২৮ আগস্ট ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন লিমিটেডকে (আইওসিএল) জিটুজি ভিত্তিতে জ্বালানি তেল সরবরাহকারী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ফলে তুলনামূলক স্বল্প সময়ে ও সাশ্রয়ী মূল্যে ডিজেল, অকটেন, ফার্নেস অয়েল, এভিয়েশন ফুয়েল আমদানি করা সম্ভব হবে।

পাশাপাশি এলএনজি আমদানির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারত যে এলএনজি নিয়ে আসছে, সেখান থেকেই যেন আমরা নিতে পারি। এভাবে যদি হিসাব করেন তাহলে মনে হয় একেবারে যে শূন্য হাতে এসেছি, সেটা বলতে পারবেন না। কী পেলাম, না পেলাম এটা তো মনের ব্যাপার। মন যদি বলে যে কিছুই পাইনি, তাহলে তো আমার কিছু বলার নেই। যেমন- বাংলাদেশে এত কাজ করার পর বিএনপি বলে, কিছুই করি নাই। তাহলে তো আমার এখানে বলার কিছু থাকে না। এটা হচ্ছে মানুষের একটা বিশ্বাসের ব্যাপার, আত্মবিশ্বাসের ব্যাপার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, আইওসিএলের অন্তর্ভুক্তির ফলে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।

‘ভারতের নুমালিগড় থেকে পাইপ লাইনে করে তেল নিয়ে আসছি এবং সেই পাইপ লাইন কিন্তু তৈরি হয়ে গেছে। এটা ভারত তৈরি করে দিচ্ছে। পার্বতীপুরে আমাদের যে ডিপো, সেই ডিপোতেই কিন্তু এটা থাকবে। এটার জন্য কিন্তু সেই চট্টগ্রাম, বাঘাবাড়িতে আমাদের আর যেতে হবে না। রিফাইন করা তেল আমরা ওখানেই পাব। উত্তরবঙ্গে অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্যতা আরও বাড়বে, মানুষের আর্থিক অবস্থার আরও উন্নতি হবে। যদিও মঙ্গা আমরাই দূর করেছি, এটাও হবে।’

‘পাশাপাশি এলএনজি আমদানির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারত যে এলএনজি নিয়ে আসছে, সেখান থেকেই যেন আমরা নিতে পারি। এভাবে যদি হিসাব করেন তাহলে মনে হয় একেবারে যে শূন্য হাতে এসেছি, সেটা বলতে পারবেন না। কী পেলাম, না পেলাম এটা তো মনের ব্যাপার। মন যদি বলে যে কিছুই পাইনি, তাহলে তো আমার কিছু বলার নেই। যেমন- বাংলাদেশে এত কাজ করার পর বিএনপি বলে, কিছুই করি নাই। তাহলে তো আমার এখানে বলার কিছু থাকে না। এটা হচ্ছে মানুষের একটা বিশ্বাসের ব্যাপার, আত্মবিশ্বাসের ব্যাপার।’

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ইতিবাচক ভারত, সমস্যা মিয়ানমার

ভারত সফরে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট করছে। নিজেদের মধ্যে অস্ত্রবাজি ও সংঘাত করছে। ভারতকে আমরা বিষয়টা বলেছি। ভারত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে ইতিবাচক। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মিয়ানমারকে নিয়ে। তারা দ্বন্দ্ব ও সংঘাতে লিপ্ত থাকে। ভারত মনে করে এটার সমাধান হওয়া উচিত। তবে আমরা কোনো যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।

রোহিঙ্গারা আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট করছে। নিজেদের মধ্যে অস্ত্রবাজি ও সংঘাত করছে। ভারতকে আমরা বিষয়টা বলেছি। ভারত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে ইতিবাচক। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মিয়ানমারকে নিয়ে। তারা দ্বন্দ্ব ও সংঘাতে লিপ্ত থাকে। ভারত মনে করে এটার সমাধান হওয়া উচিত। তবে আমরা কোনো যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
অর্থপাচারে স্বনামধন্য অনেকের নাম আছে

বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচার এবং ডলার সংকট সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নজরদারিতে আনা হয়েছে বলেই জানা গেছে। আপনারা (সাংবাদিক) তো খুঁজে বের করেননি। অনেকের বিষয়ে এমন তথ্য আছে, যেগুলো লিখবেন কি না সন্দেহ আছে। অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তির ব্যাপারেও আছে। দুদক-বাংলাদেশ ব্যাংক এসব বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে। আপনারা তখন লিখবেন কি না সেটা দেখব।’

সুইস ব্যাংকের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে কিন্তু পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তদন্ত হচ্ছে। সুইস ব্যাংকে বহু আগে ই-মেইল পাঠিয়েছিলাম, তালিকা চেয়েছিলাম। কিন্তু কোনো তালিকা আসেনি।’

অর্থপাচার নিয়ে যে অভিযোগ আসে সেটা ‘সুনির্দিষ্ট নয়’ বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘সবাই বলে দেয়, কিন্তু সঠিক তথ্য কেউ দিতে পারে না। তবে, মানি লন্ডারিং বন্ধে নানা উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

ডলার সংকট ও রিজার্ভ কমা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডলার সংকট তো বাংলাদেশের একার নয়। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বেই এটা দেখা দিয়েছে। ডলার নিয়ে কিছু খেলা হচ্ছিল। সেটা মনিটরিং হয়েছে বলে স্বস্তি আনতে পেরেছি।’

নজরদারিতে আনা হয়েছে বলেই জানা গেছে। আপনারা (সাংবাদিক) তো খুঁজে বের করেননি। অনেকের বিষয়ে এমন তথ্য আছে, যেগুলো লিখবেন কি না সন্দেহ আছে। অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তির ব্যাপারেও আছে। দুদক-বাংলাদেশ ব্যাংক এসব বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে। আপনারা তখন লিখবেন কি না, সেটা দেখব
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
‘আমার তো শঙ্কা, বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। বিশ্বের অর্থনীতি চরম সংকটে পড়বে। কিন্তু আমাদের মাটি আছে। উৎপাদন বাড়ালে খেয়ে-পরে বেঁচে যাব।’

রিজার্ভের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আসার আগে রিজার্ভ কত ছিল আর এখন কত আছে? করোনার সময় কোনো খরচ ছিল না, রিজার্ভ বেড়েছে। এরপর ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানিসহ নানা কারণে রিজার্ভ কমেছে। বাংলাদেশ যেখান থেকে যত ঋণ নেয়, সময় মতো তা পরিশোধ করে। এটা করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে টান পড়ে।’

আমার তো শঙ্কা, সারাবিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। সারাবিশ্বের অর্থনীতি চরম সংকটে পড়বে। কিন্তু আমাদের মাটি আছে। উৎপাদন বাড়ালে খেয়ে-পরে বেঁচে যাব
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ভারত সফরে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্জন হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। লিখিত বক্তব্যে সেসব তুলে ধরেন তিনি। বলেন, ‘কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টনে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, যার মাধ্যমে ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত। ভুটানের সঙ্গে রেল যোগাযোগ ও অন্যান্য আন্তঃসীমান্ত রেলসংযোগে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারতীয় নেতৃত্বের শীর্ষ পর্যায়ে, সংবাদমাধ্যমে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আমি বাংলাদেশের জন্য যে প্রীতি ও সৌহার্দ্য লক্ষ্য করেছি, তা সত্যিই অসাধারণ। এই প্রীতির সম্পর্ককে সুসংহত করে আমরা আরও এগিয়ে যেতে চাই। এই সফরে সহযোগিতার যেসব ক্ষেত্র চিহ্নিত হয়েছে এবং বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করলে উভয় দেশের জনগণ উপকৃত হবে বলে আমি মনে করি।’